এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়
এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়

ব্রাদার্স সমর্থকদের সঙ্গে মারামারি শেখ জামালের খেলোয়াড়দের

ছুটি কাটিয়ে ফেরার পর জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে প্রতিদিনই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ দেখেন। আজও ভিআইপি গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন এই ব্রিটিশ কোচ। আজ তাই লজ্জার এক ঘটনার সাক্ষী হলেন জেমি ডে। জাতীয় দলের কোচের সামনেই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবলাররা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন ব্রাদার্স ইউনিয়নের সমর্থকদের সঙ্গে।

প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হওয়ার পর আজই প্রথম মাঠে নেমেছিল ব্রাদার্স। পুরো লিগে মাত্র একটা জয় পাওয়া ব্রাদার্সের জালে আজ একবারও বল ঢোকাতে পারেননি শেখ জামালের ফুটবলাররা। গোল করতে না পারার ব্যর্থতায় এমনিতেই তেতে ছিলেন সলোমন কিং, ওমর জোবে, রেজাউল করিমরা। এর ওপর ম্যাচের যোগ হওয়া সময়ে বারবার চোটে পড়ার অজুহাতে ব্রাদার্সের ফুটবলাররা সময় নষ্ট করছিলেন। গোলশূন্য ড্র ম্যাচে এসব দেখে মেজাজ হারিয়ে শেষে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন শেখ জামালের ফুটবলাররা।

ঘটনার শুরু এখানে

ঘটনার শুরু ম্যাচের শেষ দিকে এসে। বক্সের বাইরে একটা ফ্রি–কিক পায় শেখ জামাল। ওই সময় সামনে দাঁড়িয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন ব্রাদার্সের নাঈম হোসেন। মেজাজ হারিয়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বসেন শেখ জামালের ফজলে রাব্বি। ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নাঈম। এটা দেখে দ্রুত নাঈমকে তুলে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন রাব্বি। কিন্তু ওই সময় রাব্বিকে মারতে এগিয়ে আসেন ব্রাদার্সের ফুটবলাররা।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই দুই দলের ফুটবলাররা এরপর হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
এমন ঘটনার পর রেফারি ভুবন মোহন তরফদার হলুদ কার্ড দেন শেখ জামালের রাব্বি ও শাকিল আহমেদকে। আর ব্রাদার্সের হয়ে হলুদ কার্ড দেখেছেন নাঈম। খানিক পরই কর্নার পায় শেখ জামাল। কিন্তু কর্নার শেষ না করেই রেফারি শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ শেখ জামালের সহকারী কোচ হাসান আল মামুন ও অন্য কয়েকজন ফুটবলার রেফারিদের ঘিরে ধরেন মাঠে।

ম্যাচের শেষে এমন দৃশ্য দেখা গেছে

তখন একই সঙ্গে গ্যালারি থেকে ব্রাদার্সের সমর্থকেরা গালাগালি করতে থাকেন শেখ জামালের ডিফেন্ডার রেজাউলসহ অন্যদের। ওই সময় ড্রেসিংরুমে ঢুকছিলেন রেজাউল। কিন্তু মেজাজ হারিয়ে রেজাউল গ্যালারিতে ঢুকে মারতে শুরু করে দেন সমর্থকদের। ব্রাদার্সের সমর্থকেরাও রেজাউলসহ অন্য ফুটবলারদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পাশে দাঁড়ানো কয়েকজন পুলিশ ও বাফুফের কর্মকর্তারা ফুটবলারদের থামাতে চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ব্রাদার্সের ম্যানেজার আমের খান ও শেখ জামালের কর্মকর্তারা মিলে দুই দলের ফুটবলারদের শান্ত করেন।

ম্যাচ শেষে আমের খান সব দোষ দিলেন রেফারিকে, ‘আমার ফুটবলারকে বল ছাড়া ধাক্কা দিলেও রেফারি কেন লাল কার্ড দেখায়নি শেখ জামালের কাউকে? বড় দলের বিপক্ষে পয়েন্ট পাওয়ার জন্য সময় কাটানোর চেষ্টা ম্যাচের শেষ দিকে সব সময়ই হয়। কিন্তু তাই বলে কেউ এভাবে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারে না। শেখ জামাল আজ মাঠে যা করেছে, এটা ফুটবলের জন্য লজ্জার।’

অবশেষে শান্ত হয় পরিস্থিতি

যদিও শেখ জামাল ম্যানেজার আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নুর দাবি উল্টো, ‘ফ্রি–কিক নেওয়ার সময় ওদের ফুটবলার বারবার সামনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করছিল। মাঠে অহেতুক পড়ে গিয়ে সময় নষ্ট করছিল। এ জন্য আমার একজন ফুটবলার দৌড়ে তাকে তুলতে গিয়েছিল। যাতে ম্যাচের সময় নষ্ট না হয়। কিন্তু ওরা গ্যালারি থেকে এভাবে গালাগালি করে মোটেও ভালো কাজ করেনি।’

২২ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়েই আছে শেখ জামাল। সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট ব্রাদার্সের।