সোনালি স্বর

বিশ্বকাপ জার্মানির পাওনাই ছিল

যোগ্য দল হিসেবেই জার্মানি চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। পুরো টুর্নামেন্টে ওরাই ছিল সেরা দল এবং খেলেছেও দল হিসেবেই। মাঠে পারফরম্যান্স দেখার আগেই বিশ্বকাপের শুরুতে আমি ওদের ফেবারিট বলেছি। যদিও কিছুটা প্রত্যাশা ছিল, হয়তো লিওনেল মেসি আর তার দল দারুণ কিছু করবে। ওরা সেই সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। তবে গোটশে সুযোগ নষ্ট করল না। অসাধারণ এক গোল করে শিরোপা জেতাল দলকে।
অতিরিক্ত সময়ে তার গোলটা আর্জেন্টাইন সমর্থকদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। তাকে বদলি হিসেবে নামানোটা ছিল কোচ জোয়াকিম লোর দারুণ একটা সিদ্ধান্ত। আর গোটশেও খুবই বুদ্ধিমান খেলোয়াড়। গোলটা করার আগে সে আর্জেন্টিনার ডি-বক্সে নিজের উপস্থিতি বুঝতেই দেয়নি। আর্জেন্টিনা ডিফেন্ডাররা তাকে খেয়ালই করেনি। গোল করার অসাধারণ ক্ষমতা আছে গোটশের, সে ঠিক চিরাচরিত জার্মান ধরনের ফুটবলার নয়। আমি আশা করি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার অনেক লম্বা হবে।
আসলে বিশ্বকাপটা জার্মানির এই প্রজন্মের পাওনাই ছিল। জোয়াকিম লোর অধীনে এই দলটা অনেক দিন একসঙ্গে খেলছে। পরপর অনেকগুলো বড় টুর্নামেন্টে ওরা খুব কাছে গিয়েও খালি হাতে ফিরেছে। অবশেষে বিশ্বকাপ ধরা দিল তাদের হাতে।
আর্জেন্টিনাকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। এই টুর্নামেন্টে ওরা ধীরে ধীরে দল হিসেবে উন্নতি করেছে। এমনকি ফাইনালেও জার্মানিকে প্রায় হারিয়ে দিচ্ছিল। হিগুয়েইন, মেসি বা প্যালাসিও এতগুলো গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচের গল্পটা অন্য রকম হতে পারত। এই আক্ষেপ তাদের অনেক বছর তাড়িয়ে বেড়াবে। ম্যারাডোনা হওয়ার জন্য মেসির অপেক্ষাটাও বেড়ে গেল আরও চার বছরের জন্য।
ফাইনালে মেসিকে ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। সাবেলা হিগুয়েইন আর লাভেজ্জিকে তুলে আগুয়েরো আর প্যালাসিওকে নামিয়েছেন। যদিও তাতে লাভ হয়নি খুব একটা। সেই তুলনায় লোর বদলিগুলো খুব কাজে দিয়েছে। একটা সময় মনে হচ্ছিল আর্জেন্টিনা টাইব্রেকারের জন্য খেলছে। ওরা সেই লক্ষ্য পূরণের খুব কাছেও চলে গিয়েছিল। শুধু বদলি হিসেবে নামা গোটশেই সব হিসাবে গড়বড় করে দিল।
জার্মানরা পরিষ্কার ফেবারিট হিসেবেই বিশ্বকাপ শুরু করেছিল। আর্জেন্টিনাকে শুরুতে খুব আত্মবিশ্বাসী মনে না হলেও ওরা ধীরে ধীরে গুছিয়ে উঠেছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফাইনালটা হয়েছে রোমাঞ্চকর এক লড়াই। খুব ট্যাকটিক্যাল ম্যাচ হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত সাহসী দলটাই জিতেছে।