টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের পর আজ চট্টগ্রামে নেপালকেও উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। নেপালের বেঁধে দেওয়া ১২৭ রানের লক্ষ্যটাকে স্রেফ মামুলি বানিয়ে শুরুতেই চড়াও হন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক। এরপর শেষ দিকে সাকিব আল হাসানের ঝোড়ো ইনিংসে ২৭ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের দেখা পেয়ে যায় মুশফিকুর রহিমের দল। আজ তামিম-এনামুলের উদ্বোধনী জুটিতে এসেছে ৬৩। ক্রিকেটের এ সংক্ষিপ্ত সংস্করণের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের পক্ষে এটিই সর্বোচ্চ। আগে এ রেকর্ডটি ছিল ৬২ রানের। সেটিতেও ছিলেন তামিম, সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ২ উইকেটে। বসন্ত রেগমির বলে তামিম ফিরেছেন ৩০ করে। ভুল-বোঝাবুঝিতে ৪২ করে রানআউট হয়ে ফিরেছেন এনামুল।
এরপর অবশ্য আর কোনো বিপদ ঘটতে দেয়নি সাকিব-সাব্বির রহমানের তৃতীয় উইকেট জুটি। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৩১ বলে ৫৩। ১৮ বলে ৩৭ করা সাকিবের টিকিটিও ছুঁতে পারেননি নেপালের বোলাররা। দেশসেরা এ অলরাউন্ডারের ইনিংসে ছয়ের মার ছিল ৪টি আর চার ১টি। তবে ম্যাচের নায়ক কোনো ব্যাটসম্যান নন, ১৭ রানে ২ উইকেট নেওয়া আল আমিনের হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার ট্রফি।
এর আগে ৬.৩ ওভারে ৩৯ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর নেপালকে অলআউট করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার উপায় ছিল না। কিন্তু নেপাল অধিনায়ক পরশ খাড়কা ও শারদ বিশ্বকরের প্রতিরোধে অলআউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। এ দুজনের চতুর্থ উইকেট জুটিতে এসেছে ৮৫ রান। তবে যে গতিতে নেপালের রান ওঠে, সেটিকে টি-টোয়েন্টিসুলভ বলা কঠিন বৈকি। নির্ধারিত ২০ ওভারে নেপালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১২৬, রান রেট ৬.৩০। টসে জিতে মুশফিকুর রহিমের ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করতে চতুর্থ ওভারে উইকেট এনে দিলেন ফরহাদ রেজা। রেজার বলে ৮ করা নেপালের ওপেনার সুবাস খাকুরেল ধরা পড়েছেন মিড অফে রাজ্জাকের হাতে। ম্যাচের শুরু থেকেই বোলারদের নিয়ে বেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন অধিনায়ক। চতুর্থ ওভারে রেজাকে আনতেই এল ব্রেক থ্রু। ষষ্ঠ ওভার করলেন সাকিব আল হাসান। এরপর সপ্তম ওভারে ফের আল আমিনকে এনেই সাফল্য পেল বাংলাদেশ। আল আমিনের বলে শর্ট কভারে সাকিবের হাতে ক্যাচ উপহার দিয়ে ফিরেছেন আরেক ওপেনার সাগর পুন (১২)। এক বল পরে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশের এ পেসার ফিরিয়েছেন ১৩ করা জ্ঞানেন্দ্র মাল্লাকেও।
সাকিবের করা ১৩.৫ ওভারে বিশ্বকরকে স্টাম্পিং করার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মুশফিক। এরপর ১৮.৪ ওভারে নিজের বলে ফিল্ডিং করে সরাসরি থ্রোতে বিশ্বকরকে রানআউট করতে ব্যর্থ হলেও দুই বল পরেই নেপালের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ করা খাড়কার স্টাম্প উপড়ে ফেলেন মাশরাফি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ করা বিশ্বকর ইনিংসের শেষ বলে রানআউটে কাটা পড়েন।
এ জয়ে বাংলাদেশের ‘সুপার টেনে’র পথ অনেকটাই পরিষ্কার হলো। ২ ম্যাচে ২ জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৪। মুশফিকদের পরের ম্যাচ ২০ মার্চ, হংকংয়ে বিপক্ষে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে একই ভেন্যুতে।