এ সফরের আগে কে-ই বা ভেবেছিল, ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ নামবে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে! তবে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে আরেকটি ইতিহাসের সামনে—নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজে হারানো। পরবর্তী প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বিশেষ কিছু অর্জন করতে মুখিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এ সিরিজের ফল বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে বিস্ময় ঘটাতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে জেতার পরই ম্যাচসেরা ফাস্ট বোলার ইবাদত হোসেন বলেছিলেন, এ জয়টা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারানো সম্ভব—সেটা করে দেখাতে চেয়েছিলেন তাঁরা। এবার ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগের দিন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে একই সুরে কথা বললেন ডমিঙ্গোও।
বাংলাদেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় এ সিরিজের তাৎপর্য তুলে ধরে ডমিঙ্গো বলেন, ‘টেস্টে আমাদের আরও অনেকদূর যেতে হবে, কোনো সন্দেহ নেই। সীমিত ওভারে, বিশেষ করে ওয়ানডেতে আমরা প্রতিটি দলের সঙ্গেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। তবে টেস্ট সংস্কৃতিতে বাংলাদেশকে অনেক দূর যেতে হবে। এ সংস্করণে ধারাবাহিক হতে হলে আরও অনেক দূর যেতে হবে। তবে এ ফলটা বিশাল ব্যাপার, টেস্টে সংখ্যার দিক দিয়ে আমাদের ফল ভালো ছিল না। আমাদের সামনে তাই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা দিন। আমরা বিশেষ কিছু করতে পারলে—বাংলাদেশে যেকোনো কিছু সম্ভব। অনেক মানুষ সেখানে, ক্রিকেটের প্রতি তীব্র অনুভূতি তাঁদের। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এটা কোথায় নিয়ে যেতে পারে, আপনি বলতে পারবেন না।’
বাংলাদেশের এ সফরটা পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ডমিঙ্গো, ‘যেমনটা বলেছি, বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটকে সব সময় ওয়ানডে দলের মানের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। এমন ফল বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে বিস্ময় ঘটাতে পারে। ফাস্ট বোলারদের জন্য বিপ্লব ঘটাতে পারে, যদি আরেকটা ভালো ফল পাওয়া যায়। হয়তো একটা প্রজন্ম গড়ে উঠবে, হয়তো এ সফরে ভালো না খেললে সেটা হতো না। খেলোয়াড়রা যারা এখানে আছে, তাদের দায়িত্ব পরবর্তীকালের খেলোয়াড়দের আশা জোগানো। তাদেরকে আশা জোগানো—নিউজিল্যান্ডে এসে তাদের হারানো সম্ভব। আমাদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ।’
সব মিলিয়ে সিরিজ জেতার জন্য দলের সবাই উন্মুখ হয়ে আছেন, ডমিঙ্গো জানিয়েছেন সেটাও, ‘প্রথম সংবাদ সম্মেলনেও যেমনটা বলেছিলাম, এটা তরুণ একটা দল। ফলে পুরোনোদের মতো নিউজিল্যান্ডে বিপক্ষে এতবার খেলে হারার ক্ষতটা তাদের নেই। দলের পরিবেশ বেশ ভালো এখন। এই তরুণেরা বাংলাদেশের ক্রিকেটে লম্বা ক্যারিয়ার গড়তে চায়। তারা অনেক উদ্যমী, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নিউজিল্যান্ডে আগে বাংলাদেশের কোনো দলই সিরিজ জিততে পারেনি, সেটা করার জন্য তারা উদ্গ্রীব হয়ে আছে। কাজ শেষ হয়নি এখনো। ছেলেরা বিশেষ কিছু অর্জন করতে চায়, যেটা দেখে পরবর্তী প্রজন্ম উৎসাহিত হতে পারে।’