গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে হারারে টেস্টের মাঝখানেই ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, টেস্ট ক্রিকেটটা আর খেলবেন না তিনি। মাহমুদউল্লাহর সেই সিদ্ধান্ত বেশ তোলপাড়ই সৃষ্টি করেছিল। তবে এরপর বিষয়টি নিয়ে আর কথা বলেননি মাহমুদউল্লাহ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটি এল আজ-মাহমুদউল্লাহ তাঁর শেষ টেস্টটি খেলে ফেলেছেন হারারেতেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে টেস্টে খেলা অপরাজিত ১৫০ রানের ইনিংসটিই তাঁর শেষ টেস্ট ইনিংস। টেস্ট ক্রিকেটটা আর খেলবেন না মাহমুদউল্লাহ।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও হারারে টেস্টেই সতীর্থদের কাছ থেকে বিদায়ী গার্ড অব অনার পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্টের শেষ দিন টেলিভিশনে ধারাভাষ্যকারও বলেছিলেন মাহমুদউল্লাহর অবসরের কথা। বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা না করে মাহমুদউল্লাহর এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান। টেস্টের মাঝপথে একাদশে থাকা একজন খেলোয়াড়ের ড্রেসিংরুমে অবসরের ঘোষণা কতটা ক্রিকেটীয়, প্রশ্ন উঠেছিল তা নিয়েও। তবে হারারে টেস্টের পর মাহমুদউল্লাহ এ নিয়ে আর কোনো কথাই বলেননি। যখনই তাঁর কাছে টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হয়েছে, তিনি সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্ট ছিল মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের ৫০তম টেস্ট। এখন সেটি হয়ে থাকছে তাঁর শেষ টেস্টও। ১২ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে খেলা এই ৫০ টেস্টে ৩৩.৪৯ গড়ে মাহমুদউল্লাহ রান করেছেন ২৯১৪। উইকেট পেয়েছেন ৪৩টি। ছয়টি টেস্টে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি।
বিসিবির পাঠানো এক বিবৃতিতে আজ মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, টেস্ট ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়াটা তাঁর জন্য সহজ ছিল না, ‘এত বছর পর ক্রিকেটের কোনো সংস্করণকে বিদায় বলাটা সহজ নয়। আমি সব সময়ই মাথা উঁচু করে থাকতে চাই। আমি মনে করি টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলার উপযুক্ত সময় আমার জন্য এটিই।’
টেস্টকে বিদায় বলার দিন মাহমুদউল্লাহ ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসানকে, ধন্যবাদ দিয়েছেন তাঁর দীর্ঘ দিনের সতীর্থদেরও ‘আমি ধন্যবাদ জানাই বিসিবি সভাপতিকে। বেশ কিছু দিন দলের বাইরে থাকার পর আমি যখন টেস্ট দলে ফিরি, তখন তিনিই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি আমার সতীর্থদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। তাঁরা সব সময়ই আমার সামর্থ্যের প্রতি আস্থা রেখেছে। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট খেলাটা সব সময়ই দারুণ সম্মান ও গৌরবের বিষয়। আমি এই চমৎকার স্মৃতি নিয়েই থাকতে চাই।’
বর্তমানে বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। টেস্ট ক্রিকেট ছাড়লেও বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলে যেতে চান তিনি, ‘যদিও আমি টেস্ট থেকে অবসর নিচ্ছি, কিন্তু আমি বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলা চালিয়ে যেতে চাই। মাঠে দেশের জন্য সামর্থ্যের সর্বোচ্চটাই দিতে চাই।’