ম্যাচ শেষে বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবলাররা।
ম্যাচ শেষে বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবলাররা।

টানা তিন বছর খালি হাতে ফিরল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

মোটামুটি গত এক দশক ধরে অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, ইউরোপা লিগ (সাবেক উয়েফা কাপ) এর শিরোপা সেভিয়া বা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হাতে না উঠলেই চমক বলে মনে হয়। আর হবে না-ই বা কেন? ২০১০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সেভিয়া ইউরোপার শিরোপা জিতেছে তিনবার, অ্যাটলেটিকো দুবার। এবারও এই ধারার ব্যত্যয় ঘটবে বলে জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। এবারও যে ফাইনালে উঠে গেছে সেভিয়া!

সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লিগের ফাইনালে পা রেখেছে সেভিয়া। ফাইনালে তাদের মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান ও শাখতার দোনেৎস্কের মধ্যে যেকোনো এক দল।

ম্যাচের আট মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ডিবক্সের মধ্যে অ্যান্থনি মার্সিয়ালের বাড়ানো এক বল পেয়ে শট করেন মার্কাস রাশফোর্ড। আর রাশফোর্ডের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়ার জন্যই বাজেভাবে ট্যাকল করে বসেন সেভিয়ার ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডিয়েগো কার্লোস। পেনাল্টি থেকে গোল পেতে ভুল হয়নি পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের।

এমন উল্লাস মানায় সেভিয়াকেই।

এরপর গল্পটা শুধুই সেভিয়ার। ২৫ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে সেভিয়ায় খেলা লেফটব্যাক সার্জিও রেগিলনের নিচু ক্রসে বাঁ পা ঠেকিয়ে গোল করেন স্প্যানিশ উইঙ্গার সুসো। গোলটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের স্বাভাবিকের চেয়ে হয়তো বেশিই কষ্ট দিয়েছে। সুসো যে আগে ইউনাইটেডের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলে খেলতেন!

ম্যাচ শেষ হওয়ার ঠিক ১২ মিনিট আগে আরেক সাবেক ইংলিশ লিগের খেলোয়াড় লিখে দেন ইউনাইটেডের ভাগ্য। ডান প্রান্ত থেকে উড়ে আসা ক্রস হাফভলি দিয়ে গোলে রূপান্তরিত করেন নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সাবেক ডাচ স্ট্রাইকার লুক ডি ইয়ং। দুটি গোলেই ইউনাইটেড রক্ষণের ভুল বেশ দৃষ্টিকটুভাবে চোখে পড়েছে। প্রথম গোলে হ্যারি ম্যাগুয়ারের অবস্থান, আর দ্বিতীয় গোলে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হেড করে বল দূরে পাঠাতে ভিক্টর লিন্ডেলফের অনাগ্রহ। এ কারণে দ্বিতীয় গোলটা খাওয়ার পর ব্রুনো ফার্নান্দেসের সঙ্গে লিন্ডেলফের ঝগড়া লেগেই গিয়েছিল প্রায়!

তবে ইউনাইটেড সমর্থকেরা নিজেদের একটু হলেও দুর্ভাগা ভাবলেও ভাবতে পারেন। তাদের বিপক্ষে খেলতে এলেই অখ্যাত গোলরক্ষকেরা যেন একেকজন লেভ ইয়াশিনে পরিণত হন! আগের রাউন্ডে কোপেনহেগেনের গোলরক্ষক, এই রাউন্ডে সেভিয়ার গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো— দুজনই খেলেছেন দুর্দান্ত। শেষ মুহূর্তে কোপেনহেগেন হেরে গেলেও এবার বুনোর দলকে হারতে হয়নি। আর তাতেই কপাল পুড়েছে ইউনাইটেডের।

আজ রাতে দ্বিতীয় সেমিতে মুখোমুখি হচ্ছে ইন্টার মিলান ও শাখতার।