ফাইনাল মানেই স্নায়ুযুদ্ধ। বিশ্বকাপের ফাইনাল তো মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে সবকিছুর। যে মাত্রাতেই উঠে যাক, শক্ত মনের জার্মানরা সব সময় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেই মাঠ ছাড়ে। মাঠে পরিস্থিতি বিরূপ হলেও তা থেকে সরে আসে না। শতভাগ পেশাদারি মনোভাব জার্মানির চেয়ে আর বেশি কার আছে!
আজকের ফাইনালে তাই জার্মানির পাল্লাই ভারী। অনেক দলেরই মাঝমাঠ-রক্ষণে বড় বড় ফাটল বের হয় প্রায়শই। অথচ জার্মানির রক্ষণের সঙ্গে মাঝমাঠের এত সুন্দর সমন্বয়, প্রতিপক্ষ ফাঁক বের করতে পারে না খুব একটা।
শুধু ফিলিপ লামরা নয়, বছরের পর পর জার্মানির খেলায় আবেগের কোনো প্রশ্রয় দেখিনি। মাঠে ওরা নামে জয় তুলতে। কখনো অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে না। ভুলভ্রান্তিও কম করে। প্রতিপক্ষ যেন ঘাড়ের ওপর চেপে বসতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। নিজেরা যেসব পাস খেলে, তার পরও থাকে নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ। অনেক দলকেই দেখেছি নিয়ন্ত্রণহীন পাস খেলতে।
এই জিনিসটা জার্মানি একদমই করে না। পাসগুলো হয় অসম্ভব নিখুঁত। নিশ্চিত না হয়ে ওরা পাস দিতেও চায় না। এটাই জার্মান মানসিকতা।
ফাইনালে ওঠার পরও জোয়াকিম লোর দলের মধ্যে কোনো বাড়তি আনন্দ দেখলাম না। আবেগ চাপা দিয়ে শেষ কাজটার দিকেই ওদের যাবতীয় মনোযোগ। মারাকানায় আজ ফাইনাল জিতেই জার্মানি উৎসব করতে চায়। আমার ধারণা, জার্মানির প্রেসিং ফুটবলই
এই মহারণের ভাগ্য গড়তে পারে। জার্মানি এই বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দারুণ প্রেসিং ফুটবল খেলে আসছে। প্রেসিংটা প্রতিপক্ষের রক্ষণ থেকেই শুরু করে জার্মানি। যেখানে ব্লক করা দরকার, সেখানে সেটাই করছে ভালোভাবে। নিজেদের ডিফেন্ডিং জোনের বাইরে আজ খেলাটা রাখতে চাইবে জার্মানি। অর্থাৎ আর্জেন্টিনার জন্য জার্মানি বার্তা ‘যা করার আমাদের রক্ষণের বাইরে গিয়ে করো।’
জার্মানির খেলার আরেকটা দিক, ওরা প্রতিপক্ষকে বল দেবে না কিছুতেই। নিজেরা বল পজেশন রাখতে চাইবে বেশি। প্রতিপক্ষ দলে মেসির মতো বল প্লেয়ার। কাজেই মেসিকে আটকাতে বিশেষ পাহারা রাখবেই। বারের নিচে নয়্যারের মতো বিশ্বসেরা গোলরক্ষক। মাঝমাঠে ক্রুসের বল ছাড়া, আক্রমণে যোগ দেওয়া দারুণ কার্যকর। আর টমাস মুলার ওত পেতে থাকবে ওপরে। এই জার্মানিকে হারানো খুবই কঠিন।