জনি বেয়ারস্টো আর বেন স্টোকস যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, সেটি আসলে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গেই বেশি যায়
জনি বেয়ারস্টো আর বেন স্টোকস যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, সেটি আসলে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গেই বেশি যায়

চার–ছক্কায় হাজার রানের রেকর্ড, টেস্ট ক্রিকেট এর আগে দেখেনি কখনো

অবিশ্বাস্য এক জয়ই!

ট্রেন্ট ব্রিজে কাল ইংল্যান্ড যেভাবে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল, সেটি তো অবিশ্বাস্য এক ঘটনাই। দিনের শেষে আরেকটি টেস্ট ম্যাচ জয় হলেও পুরো বিষয়টি অবিশ্বাস্য লাগছে আসলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের ধরনের কারণেই। জনি বেয়ারস্টো আর বেন স্টোকস যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, সেটি আসলে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গেই বেশি যায়। সে কারণেই জয়টির মাহাত্ম্য বেড়ে গেছে অনেকখানিই।

টেস্টের পঞ্চম দিনে এসে ইংল্যান্ড ২৯৮ রান তাড়া করেছে ৫০ ওভারে। ট্রেন্ট ব্রিজে চতুর্থ ইনিংসে এটি সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডও। বাউন্ডারি থেকে আসা সবচেয়ে বেশি রানের নতুন রেকর্ডও গড়েছে এই টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ৫৫৩ রান তুলেও হেরেছে নিউজিল্যান্ড, তবে বাউন্ডারির সংখ্যায় অবদান তো তাদেরও কম নয়!

আরেকটি বাউন্ডারি

ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাউন্ডারি থেকেই এসেছে এক হাজারের বেশি রান (১০৪৪)। এর আগে বাউন্ডারি থেকে সর্বোচ্চ ৯৭৬ রান এসেছিল ২০০৪ সালে সিডনিতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্টে। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় টেস্টে বাউন্ডারি এসেছে মোট ২৪৯টি। ২৪টি ছক্কার সঙ্গে দেখা গেছে ২২৫টি চার।

এর আগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি ছিল সিডনিতেই, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া মেরেছিল মোট ২৪২টি। সিডনিতে চারের সংখ্যা অবশ্য ট্রেন্ট ব্রিজের চেয়েও বেশি ছিল—২৩৮টি। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার সেই টেস্টে দুই দলের ব্যাটসম্যানরা ছক্কা মেরেছিলেন মাত্র ৪টি। এর ফলে চারের সংখ্যায় ট্রেন্ট ব্রিজ থাকছে দুইয়েই।

শেষ দিনে বিনা পয়সায় খেলা দেখেছেন দর্শকেরা

টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারা হয়েছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিশাখাপত্তনম টেস্টে—৩৭টি। এ তালিকায় দুইয়ে আছে ২০১৪-১৫ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান টেস্ট, যেখানে ছিল ৩৫টি ছক্কা। ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্ট (২৪টি) থেকেও বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড আছে দুটি—২০০৬ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ফয়সলাবাদ টেস্ট (২৭টি), ২০১৩-১৪ মৌসুমে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড টেস্ট (২৭টি)।

অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে ফিরছেন জনি বেয়ারস্টো

ট্রেন্ট ব্রিজ তাই অনন্য হয়ে থাকছে বাউন্ডারি থেকে আসা রানসংখ্যার দিক দিয়েই। গতকাল টেস্টের শেষ সেশনে বেয়ারস্টো আর স্টোকসের জুটিতে ১২১ বলে এসেছে ১৭৯। চা–বিরতির সময়ও ইংলিশদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১৩৯। শেষ সেশনে কমপক্ষে ৩৮ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পেত তারা, প্রয়োজন ছিল ১৬০ রান। চা–বিরতি থেকে এসেই ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেন বেয়ারস্টো আর স্টোকস। নেতৃত্বটা দিয়েছেন বেয়ারস্টোই। ৯২ বলে খেলেছেন ১৩৬ রানের ইনিংস। যে বেয়ারস্টো চা–বিরতির আগে ৪৮ বলে ৪৩ রান করেছিলেন, সেই তিনিই শতক পেয়ে যান ৭৭ বলে। তিনি মাত্র এক বল বেশি খেলার কারণে ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটের দ্রুততম শতকটির মালিক হননি। জোসেপ গিলবার্ট ১৯০২ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শতক করেছিলেন ৭৬ বলে।