ইদানীং মাঠের বাইরেই বেশি ব্যস্ত থাকছেন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ। হকির চলমান সংকট দূর করতে কখনো সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন। কখনো বৈঠক করতে হচ্ছে আবাহনী ক্লাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে। কাল সকালে সভায় বসেছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরারের সঙ্গেও। এরপর দুপুরে মাত্র আধা ঘণ্টার জন্য আসেন ফেডারেশন কার্যালয়ে। নিজের কক্ষে ঢুকেই ব্যস্ত হয়ে গেলেন হকির গঠনতন্ত্র দেখতে। তাহলে কি পদত্যাগের প্রস্তুতিই নিচ্ছেন তিনি?
তবে পদত্যাগের প্রসঙ্গে রহমতউল্লাহ সরাসরি কিছু বলতে চাইলেন না, ‘খেলাটা কীভাবে মাঠে নামানো যায়, সেটাই ভাবছি। আমার কাছে হকি সবার আগে। হকির স্বার্থে যা করা লাগে, সেটা করতে প্রস্তুত আছি। জিবি (কার্যনির্বাহী কমিটি) মিটিংয়েই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’ ২৩ অক্টোবর হবে কার্যনির্বাহী কমিটির ওই সভা।
পরশু রাতে সহসভাপতি আবদুস সাদেকের গুলশানের বাসায় বসে বিদ্রোহী খেলোয়াড়েরা মাঠে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু পরদিনই তাঁরা ঘুরে যান ১৮০ ডিগ্রি। এসবের পেছনে ষড়যন্ত্র দেখছেন রহমতউল্লাহ, ‘আসলে খেলোয়াড়দের নিয়ে এক পক্ষ খেলছে।’ সেই পক্ষ যে বিদ্রোহী চার ক্লাব, আকার-ইঙ্গিতে যেন সেটাই বুঝিয়ে দিলেন, ‘এরা কারা তা বলার কিছু নেই। সবাই জানেন।’
সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগ করলে নির্বাচনের মাধ্যমেই নতুন কাউকে ওই পদে বসাতে হবে—রহমতউল্লাহর পদত্যাগের গুঞ্জনে এমন আলোচনা হকি অঙ্গনে। কিন্তু গঠনতন্ত্রের ১২(২) ধারা অনুযায়ী নির্বাচনের পর কোনো কারণে কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ছাড়া অন্য কোনো পদ শূন্য হলে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বা সাধারণ পরিষদের সদস্যদের যে কেউ এই পদে আসতে পারবেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ এর বিরোধিতা করলে প্রয়োজনে গঠনতন্ত্র সংশোধন করেও সমস্যা সমাধানে প্রস্তুত ফেডারেশন। রহমতউল্লাহর কথা, ‘সবাই চাইলে গঠনতন্ত্র বদলানো যাবে। জাতীয় স্বার্থে দেশের সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এখানে সমস্যা সমাধান হওয়াটাই মুখ্য। দেখতে হবে আমাদের সবাই এ ব্যাপারে আন্তরিক কিনা। গঠনতন্ত্র তো বাইবেল-কোরআন না যে এটি বদলানো যাবে না।’ সে ক্ষেত্রে সভাপতির একক ক্ষমতাবলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে বলে জানালেন তিনি, ‘সভাপতি নিজের ক্ষমতাবলে যদি সমস্যার সমাধান করতে পারেন, সেটা হকির জন্যই ভালো। আসলে গঠনতন্ত্রের দোহাই দিচ্ছে যারা, তারা চায় না যে এই ব্যাপারটার সুষ্ঠু সমাধান হোক।’ রহমতউল্লাহর দাবি, এই দুঃসময়ে কমিটির সবাই তাঁর পাশেই আছেন, ‘অনেকে বলেন, আমার পক্ষে কেউ নেই। আসলে সবাই পক্ষে। অনেকে তো চিন্তা করছে কমিটি ভাঙার দরকার নেই। কারণ, কমিটি ভাঙলে অনেকে নতুন করে কাউন্সিলর হতে পারবে না।’