বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো
বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো

কেন এমন হচ্ছে, জানেন না ডমিঙ্গো

প্রথম ইনিংসের শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয় বাংলাদেশ দারুণভাবে সামাল দিয়েছিল মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের জুটিতে। দ্বিতীয় ইনিংসে ওই লড়াইয়ে উজ্জীবিত হওয়া দূরে কথা, আবার এলোমেলো ব্যাটিংয়েরই পুনরাবৃত্তি। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলছেন, কেন এমন হচ্ছে তিনি জানেন না। তবে সামনে পরিবর্তন আনতেই হবে।

চতুর্থ দিন ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া বাংলাদেশ পঞ্চম দিনে ফিরে আসতে পারেনি আর। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস একটু লড়াই করেছিলেন, তবে যথেষ্ট হয়নি তা। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাওয়া হলে ডমিঙ্গোর কণ্ঠে অসহায়ত্বই ফুটে উঠল, ‘দেখুন, এ প্রশ্নের উত্তর জানলে তো এমন হতো না। তবে আমাদের ভিন্ন কিছু করতে হবে। সেটা ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন হোক, বা এ রকম দু-একটি ব্যাপার। ২৪ রানে ৫ বা ২৫ (২৩) রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর এমন অবস্থা থেকে আপনি টেস্ট জিতবেন না। এসব দিকে নজর দিতে হবে, পরিস্থিতি বদলাতে হবে।’

লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন সাকিব ও লিটন

শুধু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই টেস্ট নয়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমন বারবার হচ্ছে, মনে করিয়ে দিয়েছেন ডমিঙ্গো, ‘গত ৬-৮ মাসে বারবার হচ্ছে এমন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ১৬১ রানে ৬ উইকেট গেল ওদের, এরপর ড্র করল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০০ (এর বেশি) রান তাড়া করল। পাকিস্তানের বিপক্ষে সুযোগ হারাল। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভালো অবস্থানে গেলাম, (ইয়াসির) রাব্বি রানআউট হলো (প্রথম টেস্টে)।’

হতাশা কেন বেশি, ডমিঙ্গো সেটি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘দিন শেষে অনেক কিছু ইতিবাচক নেওয়ার আছে। আমরা খুব কাছে যাচ্ছি, ভালো অবস্থানে যাচ্ছি, এরপর একটা বাজে সেশন যাচ্ছে। কোচিং স্টাফ বা খেলোয়াড়দের জন্য ব্যাপারটা অনেক হতাশার। কারণ, তারা অনেক ভালো কিছু করছে, লড়াই করছে, তবে একটা পর্যায়ে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছে। চার দিন হয়তো লড়াই করছি, কিন্তু এমন একটা বাজে সেশন যাচ্ছে, যেখান থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় থাকে না।’

দিন শেষে অনেক কিছু ইতিবাচক নেওয়ার আছে। আমরা খুব কাছে যাচ্ছি, ভালো অবস্থানে যাচ্ছি, এরপর একটা বাজে সেশন যাচ্ছে। কোচিং স্টাফ বা খেলোয়াড়দের জন্য ব্যাপারটা অনেক হতাশার।
রাসেল ডমিঙ্গো, বাংলাদেশের প্রধান কোচ

বাংলাদেশের প্রধান কোচ বলছেন, এসব ছোটখাটো ভুল এড়াতে অভিজ্ঞতা দরকার, আত্মবিশ্বাস দরকার। তবে সেসব অর্জন করার উপায় আবার কিছু ম্যাচ জেতা, মনে করিয়ে দিলেন সেটিও। এমন দ্বিমুখী সমস্যার সামনে পড়ে সমাধানের পথ তিনি খুঁজছেন এভাবে, ‘যদি ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন অথবা দু-একটি নতুন কিছু করতে হয়। সামনে এগোতে গেলে এসব করতেই হবে। গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে গিয়ে অনেক ছোটখাটো ভুল হচ্ছে আসলে।’

ছোটখাট ভুল হচ্ছে অনেক, মনে করেন ডমিঙ্গো

মিরপুর টেস্টে একটা দুর্লভ কীর্তিই গড়ে ফেলেছেন শ্রীলঙ্কা পেসার আসিতা ফার্নান্ডো। জহির খান ও ইরফান পাঠানের পর তৃতীয় পেসার হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৬৫ রান ছাপিয়ে শ্রীলঙ্কা করেছে ৫০০-এর ওপর রান। ডমিঙ্গো এর পেছনের কারণ হিসেবে ‘নতুন’ বোলিং আক্রমণের কথা বললেন, ‘আমরা নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতেছিলাম, সেখানে তাসকিন, শরীফুল, ইবাদত, মিরাজ ছিল। এ টেস্টে শুধু ইবাদতকে পেয়েছি আমরা। একেবারেই নতুন বোলিং আক্রমণ আগের টেস্টের তুলনায়।’

তবে তুলনামূলক নতুন আক্রমণ হিসেবেও বোলিংটা ভালো হয়নি, সেটি অবশ্য স্বীকার করে নিলেন তিনি, ‘পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখবেন—স্কয়ার লেগ, ফাইন লেগ, মিডউইকেটের দিকে এত রান হয়েছে। আমি এর আগে এমন হতে দেখিনি। অনেক বেশি স্ট্রেইট বল, অনেক সহজ বল করা হয়েছে, যথেষ্ট ভালো বোলিং করিনি আসলে। বিশেষ করে দ্বিতীয় দিনে, শেষ দিকে। না হলে ৫০০-এর কাছাকাছি যেতে পারে না। এমন ছোটখাটো বিষয়ই পার্থক্য গড়ে দেয়।’