For more cricket videos go to www.bongocricket.com.
বিশ্বকাপ শুরুর আগে তাঁদের নাম ফেবারিট হিসেবে আসেনি। গ্রুপটা যে মৃত্যুকূপ। তাই গ্রুপ পর্বে, বড়জোর সেমিফাইনালেই নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনের সমাপ্তি দেখছিলেন বেশির ভাগ সমর্থক-বিশ্লেষক। সে সম্ভাবনা কিন্তু এখনো আছে। তবে সুপার টেনের প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অন্তত ভাবনাটা বদলাতে বাধ্য করেছে নিউজিল্যান্ড।
ভারতকে লজ্জার হার উপহার দিয়ে টুর্নামেন্টে শুভসূচনা। সেটিকে যদি কেউ ‘ফাঁকতালে’ হয়ে গেছে ভেবে থাকেন, কাল ধর্মশালায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে সেই ভাবনাটি এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিল কেন উইলিয়ামসনের দল। রোমাঞ্চকর ম্যাচটায় মাত্র ৮ রানে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। তবে ম্যাচজুড়ে ছোট ছোট সিদ্ধান্তে, ম্যাচ বদলে দেওয়া মুহূর্তগুলোয় আধিপত্য দেখিয়েছে কিউইরা। ধর্মশালার উঁচু পাহাড়ের কোল থেকে হয়তো একটা ঘোষণাও দিয়েছে—‘ফেবারিট না হতে পারি, তবে আমরাও দৌড়ে আছি।’
উইকেট কিছুটা ধীরগতির, টস জিতে তাই আগে ব্যাটিং নেন কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন। মার্টিন গাপটিলকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের শুরুটাও করেন দুর্দান্ত। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই বিনা উইকেটে ৫৮। তবে এই জুটি ভেঙে যেতেই থমকে যায় রানের গতি। ১৬০-৭০-এর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ইনিংসটা থেমে যায় ‘মাত্র’ ১৪২-এ। যদিও ম্যাচ শেষে উইলিয়ামসনের দাবি, এই রানই নাকি পর্যাপ্ত মনে হয়েছিল, ‘আমরা ভাগ্যবান, দুই ম্যাচেই প্রায় একই ধরনের উইকেট পেলাম। কৌশলও একই ছিল। এ ধরনের পিচে ১৪০ রানও বেশ ভালো।’
সেটিই সত্যি হলো। রানটা অস্ট্রেলিয়ার নাগালের বাইরেই রয়ে গেল। সূচনা অস্ট্রেলিয়ার ভালো হয়েছিল, খাজা-ওয়াটসনের উদ্বোধনী জুটিতে ৫.২ ওভারেই ৪৪ রান এসেছে। কিন্তু দুই মিচেল—স্যান্টনার ও ম্যাকলেনাহানের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার। থেমে যায় লক্ষ্য থেকে ৮ রান দূরে।
এই ৮ রানের ব্যবধানের অনেক ব্যাখ্যাই আসবে। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের ব্যাখ্যাটাও এই তালিকায় থাকবে, ‘ভেবেছিলাম ১৫০ পার স্কোর। কিন্তু ওদের স্পিনাররা বেশ ভালো বোলিং করল, আর আমরা একদমই জবাব দিতে পারলাম না। আমরা জোট বেঁধে উইকেট হারিয়েছি, কোনো জুটিই গড়তে পারিনি।’
তবে স্মিথ যেটি বলতে পারেননি, সেটিই বোধ হয় এই ম্যাচে মূল পার্থক্যটা গড়ে দিয়েছে—পরিকল্পনা ও তার প্রয়োগ। বিশ্বকাপে নিজেদের দুটি ম্যাচেই তো মাঠের খেলার আগে মস্তিষ্কের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে হারিয়েছে কিউইরা। প্রথম ম্যাচে পিচ ‘পড়ে’ নিয়ে দুজন স্পিনার বেশি নেওয়া, কাল আবার এক স্পিনারকে বসিয়ে পেসার ম্যাকলেনাহানকে দলে নিয়ে আসা। সেই ম্যাকলেনাহানই অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন, ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরাও হলেন।
ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৪-এর বেশি করতে পারেননি, তবু কাল অধিনায়ক উইলিয়ামসনই যেন বুঝিয়ে দিলেন, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার সব যোগ্যতাই তাঁর আছে। ক্রিকইনফো।