পার্থের অনেক দর্শককেই পরশু স্মৃতিকাতর করে দিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। তাদের অনেকেই ফিরে গিয়েছিল পাঁচ বছর আগে। অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে এই পার্থেই ঝড় তুলেছিলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। সেঞ্চুরি তুলেছিলেন ৫৭ বলে। মাত্র এক বলের জন্য ছুঁতে পারেননি ভিভ রিচার্ডসের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।পরশু সেই পার্থেই যেন গিলক্রিস্টের ছায়া ভর করেছিল ডেভিড ওয়ার্নারের মধ্যে। ‘গিলি’র মতো তিনিও বাঁহাতি, তিনিও নিউ সাউথ ওয়েলসের। এত এত মিল যখন আছে, ৬৯ বলে সেঞ্চুরি করা ওয়ার্নারের মধ্যে যে অস্ট্রেলিয়া মিডিয়া ‘নতুন গিলক্রিস্ট’ ছায়া খুঁজে পাবে, এতে আর বিস্ময়ের কী আছে!‘ঘূর্ণিঝড় ওয়ার্নার’ শিরোনামে দি অস্ট্রেলিয়ান লিখেছে, ‘টেস্ট ওপেনারদের মধ্যে ওয়ার্নার যখন সর্বকালের দ্রুততম সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড গড়লেন, সেই সময়েই যেন অ্যাডাম গিলক্রিস্টের পুনর্জন্ম হলো। চড়াও হলেন ভারতীয় আক্রমণের ওপর, যাদের বুকে সাহসের ঘাটতি ছিল, যারা কী করবে ভেবেই পাচ্ছিল না।’কেন তাঁকে নতুন গিলক্রিস্ট বলা হবে সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছে পত্রিকাটি, ‘পাঁচ বছর আগে একই মাঠে গিলক্রিস্ট অ্যাশেজের দ্রুততম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন মাত্র ৫৭ বলে। এর পর আর কোনো অস্ট্রেলিয়ান এভাবে প্রতিপক্ষকে বশে আনতে পারেনি।’ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান আবার ওয়ার্নারের স্তুতি করার পাশাপাশি ভারতীয় দলকে ব্যঙ্গ করার সুযোগটাও হাতছাড়া করেনি, ‘এই বাঁহাতিকে একবারই থামাতে পেরেছিল ভারত, সেটিও উমেশ যাদবকে দিয়ে তাঁর হেলমেটে আঘাত হেনে, ওয়ার্নার ততক্ষণে ৮০ রান তুলে ফেলেছেন।’সিডনি মর্নিং হেরাল্ড ‘অপার্থিব’ শিরোনাম দিয়ে লিখেছে, ‘অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের দুর্দশাগ্রস্ত এই সফরে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিলেন ওয়ার্নার। ভারত চাইলে এখনই বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিটা অস্ট্রেলিয়ার হাতে তুলে দিতে পারে।’যাঁকে নিয়ে অস্ট্রেলীয় মিডিয়ায় এত মাতামাতি, সেই ওয়ার্নার নিজের পা মাটিতেই রাখছেন। নিজেকে নিয়ে নয়, তাঁর সব চিন্তা যেন ভারতের দুর্দশা নিয়েই। ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ এমনও মনে করছেন, ভারতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, ‘দেশের বাইরে পারফরম্যান্স করা ভারতের জন্য সব সময়ই ছিল চ্যালেঞ্জ। সবাই বাউন্সি উইকেটে তাদের অসহায়ত্ব নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু ভেবে দেখুন, টেন্ডুলকার-দ্রাবিড়রা যখন কয়েক বছরের মধ্যে অবসর নেবে, তখন কী দশা হবে ভারতের ক্রিকেটের! দলের ভার নেওয়ার মতো তরুণেরা কি উঠে আসছে?’ এএফপি, ওয়েবসাইট।