এক সময়ের রোমাঞ্চকর ওয়ানডে ক্রিকেট এখন টি–টোয়েন্টির যুগে এসে অর্থহীন মনে করছেন আকাশ চোপড়া
এক সময়ের রোমাঞ্চকর ওয়ানডে ক্রিকেট এখন টি–টোয়েন্টির যুগে এসে অর্থহীন মনে করছেন আকাশ চোপড়া

‘ওয়ানডে ক্রিকেট এখন সবচেয়ে বিরক্তিকর, অর্থহীনও’

এমন আলোচনা আগেও হয়েছে। টি-টোয়েন্টির কারণে ওয়ানডে ক্রিকেট প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলছে কি না! ২০ ওভারের ম্যাচ দর্শকদের সাড়ে তিন ঘণ্টায় যে উত্তেজনা আর রোমাঞ্চের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়, সে তুলনায় ৫০ ওভারের ক্রিকেট যেন বেশ ধীরগতির। টি-টোয়েন্টির যুগে ওয়ানডে ক্রিকেট বিরক্তিকর হয়ে উঠছে কি না, সে ধরনের কথাবার্তা হালে বেশ চাউর। ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান ও বর্তমানের ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়ার কাছে ওয়ানডে ক্রিকেট বিরক্তিকরই। এই সংস্করণকে ‘অর্থহীন’ বলছেন তিনি।

ওয়ানডে ক্রিকেটের কোনো মানে খুঁজে পান না আকাশ

ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী কিছুদিন আগেই টি-টোয়েন্টি সংস্করণে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বন্ধ করে কেবল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে মনোনিবেশ করার কথা বলেছিলেন। তাঁর প্রস্তাব ছিল, টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হবে কেবল বিশ্বকাপে। তবে আকাশ চোপড়া ওয়ানডে বদলে টি-টোয়েন্টি সংস্করণই দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে বেশি করে আয়োজনের পক্ষে।

রবি শাস্ত্রীর মতে, কেউই দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ মনে রাখবে না। আকাশ অবশ্য মনে করেন, এ মুহূর্তে ওয়ানডে ক্রিকেটই বরং ক্রিকেটপ্রেমীদের অনাগ্রহের কেন্দ্রে। এ সংস্করণ প্রচার করতে সম্প্রচারকারকেরাও সেভাবে আগ্রহী হচ্ছেন না বলেই মনে হচ্ছে তাঁর। একইভাবে ক্রিকেটপ্রেমীরাও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে কোনো অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁর মতে, ‘এ মুহূর্তে ক্রিকেটের সবচেয়ে অর্থহীন সংস্করণ হলো ওয়ানডে ক্রিকেট।’

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের রমরমা সময় এখন

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এ বিষয়ে বিশদ বলেছেন আকাশ চোপড়া। তিনি মনে করেন, টি-টোয়েন্টি সংস্করণ যদি দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেটি বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রিতে বাজে প্রভাব রাখবে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি যদি কেবল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সীমাবদ্ধ রাখা হয়, তাহলে ক্রিকেটার ও আন্তর্জাতিক দলগুলো বিশ্বকাপের জন্য সত্যিকারের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কখনোই পাবে না।

আকাশ চোপড়া বলেছেন, ‘যদি দর্শকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করা হয়, এ ক্ষেত্রে টেস্ট ক্রিকেটকে আলাদা করে রেখেও বলা যায়, ওয়ানডে ক্রিকেট রীতিমতো বিরক্তিকর। এটা সবচেয়ে অর্থহীনও। এটা এমন একটা সংস্করণ, যা কেউই তা মনে রাখবে না। আমার মনে হয়, ওয়ানডে ক্রিকেট এখন অস্তিত্বের সঙ্গে লড়ছে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিই বেশি করে হওয়া প্রয়োজন। এটা সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও দরকার। এটি অর্থকরীও। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি না হলে প্রতিটি দেশেই সম্প্রচার বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। কেবল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হলে দলগুলোও নিজেদের প্রস্তুতির সুযোগ পাবে না।’

এর আগে রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন ঠিক উল্টোটা, ‘আমার মনে হয়, দ্বিপক্ষীয় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি কেউই মনে রাখবে না। আমি নিজে ভারতের কোচ ছিলাম। কিন্তু শেষ ছয়-সাত বছরে আমার কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির কথা মনে নেই। আমরা দুর্ভাগ্যবশত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিততে পারিনি। সুতরাং সেগুলোও মনে রাখার প্রশ্ন নেই।’