খেলার নিয়মটা সোজা। কার্ডে কারও বা কিছু একটার নাম লেখা থাকবে। সেটি এমনভাবে আপনি কপালের সামনে তুলে ধরবে, যাতে অন্যজন এটা দেখতে পান। দেখে তিনি একটা সূত্র দেবেন, সেটা থেকে আপনাকে নামটা অনুমান করার চেষ্টা করতে হবে। সম্প্রতি একটা ভিডিও সাক্ষাৎকারে এই ‘হেডস্ আপ’ খেলছিলেন উসাইন বোল্ট। বেশ মজাও পাচ্ছিলেন। একটি কার্ডে লেখা নাম বলার জন্য বোল্টকে সূত্র দেওয়া হলো, ‘২০০৮ অলিম্পিকের সবচেয়ে সফল অ্যাথলেট’। চট করে নিজের নামটাই বলে ফেললেন সর্বকালের দ্রুততম মানব। পরক্ষণেই বুঝলেন, ভুল করে ফেলেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই সঠিক উত্তরটা বলে দিলেন। সেটি যে মাইকেল ফেলপস, তা আপনার অনুমান করে ফেলার কথা।
ট্র্যাক আর সুইমিং পুলের দুই মহাতারকার সামর্থ্যের তুঙ্গ ছোঁয়া একই সময়ে—২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে। বোল্ট তিনটি সোনা জিতেছিলেন, তিনটিই বিশ্ব রেকর্ড গড়ে। ফেলপস ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তাঁকেও। গড়েছিলেন এক আসরে আটটি সোনা জয়ের অভূতপূর্ব কীর্তি! ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকেও ছিলেন দুজন। বোল্ট আগের বারের সাফল্য ধরে রাখলেও ফেলপস তা পারেননি। তার পরও অবশ্য জিতেছেন চারটি সোনা।
অথচ অবিশ্বাস্য হলো, বোল্ট আর ফেলপস কখনো দেখা হয়নি। গত তিনটি অলিম্পিকেই ছিলেন দুজন। সেখানে তো নয়ই, কোনো অনুষ্ঠানেও নয়। গত মাসে ফেলপস ই জানিয়েছেন, ‘সাধারণত অ্যাথলেটদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা হ্যালো বলি। আমি কখনো ওর পাশ দিয়ে হেঁটে যাইনি, ওকে দেখিইনি।’ কিন্তু দুজনের দুটি পথ সব সময় দুটি দিকে বেঁকে গেছে কেন? কোনো রেষারেষি নয়, ঘটনাচক্রেই হয়নি।
সেই ‘অতৃপ্তি’ এবার ঝেড়ে ফেলতে চান দুজনেই। ফেলপস সম্প্রতি বলেছেন, ‘অবশ্যই আপনি বিশ্বের দ্রুততম মানুষের সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন।’ বোল্টেরও আগ্রহের অভাব নেই, ‘ওর সঙ্গে কথা বলতে পারলে তো দারুণ হবে।’ সঙ্গে বলেছেন, ‘আমি জানি, সাঁতার সহজ নয়। আমি অনেক খেলাতেই নিজেকে পরখ করে দেখেছি, সব খেলার প্রতি আমার সম্মান আছে। আটটা সোনা জেতা মুখের কথা নয়। শ্রদ্ধা আপনাকে করতেই হবে।’ ফেলপসর কথাতেও বোল্টের প্রতি মুগ্ধতার প্রকাশ, ‘অবশ্যই সে দারুণ প্রতিভাবান, সর্বকালের দ্রুততম। আমি জানি না আমার আর কী বলা উচিত।’
২০১৬ অলিম্পিকে বোল্ট তো থাকবেনই। ফেলপসও রিও অলিম্পিককে মাথায় রেখেই অবসর থেকে ফিরেছেন। ওখানেই কি তাহলে দেখা হবে দুজনের? এনবিসি।