‘ব্যাটসম্যানদের কঠিন সময়টা পার করতে হবে।’
কথাটা সেন্ট লুসিয়া টেস্টের টসের সময় বলেছিলেন সাকিব আল হাসান। ‘কঠিন সময়’ বলতে সাকিব সকালের সেশনের কথাই বুঝিয়েছিলেন। বাংলাদেশও ২৬ ওভারের সকালের সেশনে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৭৭ রান তোলে। ইদানিং যে হারে বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারে ধস নামছিল, সে হিসেবে সেন্ট লুসিয়া টেস্টে বাংলাদেশের সকালটাকে ভালোই বলতেই হয়।
দ্বিতীয় সেশনকে অবশ্য ভালো বলা যাচ্ছে না। সাকিবসহ এ সেশনে ফিরেছেন এনামুল হক, নাজমুল হোসেন ও নুরুল হাসানও। সাকিব বোল্ড হলেও বাকি দুজন হয়েছেন এলবিডব্লু, দুজনই রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলের হাত থেকে বাঁচতে পারেননি। লিটন দাস ও নুরুল হাসান ২১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে গেছেন চা-বিরতিতে। ৬ উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ১৫৯ রান।
সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় সেশনকে তাই ‘আম্পায়ার্স কল’ এর সেশন বললে ভুল হবে না। প্রথম সেশনে মাহমুদুল হাসান ও তামিম ইকবালের উইকেটের পর ৮ বছর পর টেস্ট দলে ফেরা এনামুল হককে নিয়ে জুটি গড়ছিলেন নাজমুল হোসেন, তবে বিরতির পর অভিষিক্ত অ্যান্ডারসন ফিলিপে সেটি ৩৭ রানের বড় হয়নি।
ইনিংসের ৩৪তম ওভারের চতুর্থ বলে এনামুলকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন এই পেসার। ওবল সিমে করা বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে আসে নিচু হয়ে। এনামুল পরাস্ত হন মুভমেন্ট ও নিচু বাউন্সে। আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আবেদনে সাড়া দেন। এনামুল শেষ মুহূর্তে রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি। ইমপ্যাক্ট আম্পায়ার্স কল থাকায় টেস্ট ক্রিকেটে এনামুলের প্রত্যাবর্তনের ইনিংসের সমাপ্তি হয় ২৩ রানে।
ঠিক পরের ওভারে আবারো ‘আম্পায়ার্স কল’ এর ‘কবলে’ পড়ে বাংলাদেশ। এবার কাইল মেয়ার্সের রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে আসা বল নাজমুলের প্যাডে আঘাত করে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের আবেদনে এবার সাড়া দেন আরেক আম্পায়ার জোয়েল উলসন। অ্যাঙ্গেল করে বল বেরিয়ে যাবে, এই আশায় নাজমুলও রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্পের ঠিক চূড়া স্পর্শ করত। আবার ‘আম্পায়ার্স কল’, এবার নাজমুলকে ৭৩ বলে ২৬ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়।
নাজমুল তো বটেই, ড্রেসিংরুমের ব্যালকনিতে থাকা তামিম ইকবাল, প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর শরীরীভাষায় ছিল অবিশ্বাস। তামিম তো দুই হাত তুলে যে ভঙ্গি করলেন, তার অনুবাদ হতে এটাই, ‘এটা কিভাবে আউট হয়!’
সাকিব নেমে লিটনের সঙ্গে জুটি গড়ার আভাসও দিচ্ছিলেন ভালো একটি চার মেরে। কিন্তু জেইডেন সিলসের প্রথম শিকার হতে সাকিবের বেশি সময় লাগেনি। ৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে আসা বাড়তি বাউন্সের বলটি স্টাম্পে ডেকে আনেন সাকিব।
নুরুল ফেরেন জোসেফের বাউন্সারে। শুরুতে খেলার চেষ্টা করতে যাওয়া নুরুল শেষ মুহুর্তে ভুল বুঝতে পারেন, তবে এর আগেই তাঁর গ্লাভস ছুঁয়ে বল যায় জশুয়া ডা সিলভার গ্লাভসে। ৩৩ রানের মধ্যে বাংলাদেশ হারায় চতুর্থ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
১ম দিন, চা-বিরতি
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫১ ওভারে ১৫৯/৬ (মাহমুদুল ১০, তামিম ৪৬, নাজমুল ২৬, এনামুল ২৩, লিটন ৩৪*, সাকিব ৮, মিরাজ ৫ ; ফিলিপ ২/৩০, জোসেফ ২/৩৭, মেয়ার্স ১/২৭)