তাসকিন আহমেদ
তাসকিন আহমেদ

অ্যান্টিগায় না থেকেও আছেন তাসকিন

‘আশা করি, ফাস্ট বোলাররা একদিন বাংলাদেশকে টেস্ট জেতাবে। ঘরে বসে এই সবই ভাবি। হয়তো অনেকেরই হাসি আসতে পারে, তবে একদিন এ কথা সত্যি হবে।’

এ মাসের শুরুতে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলছিলেন তাসকিন আহমেদ। চোটের সঙ্গে লড়াই চলছে, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওই দিন নেটে ফিরে বোলিং করেছিলেন এ ফাস্ট বোলার। পেস বোলিং নিয়ে অমন আশার কথা শুনিয়েছিলেন তখনই।

চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট দলে নেই সাম্প্রতিক সময়ে পেস আক্রমণের ‘নেতা’ হয়ে ওঠা তাসকিন। তবে না থেকেও তিনি যেন দলের সঙ্গেই আছেন! অন্তত অ্যান্টিগা টেস্টের পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কথা শুনে মনে হবে তেমনই।

দ্বিতীয় ইনিংসে তো অসম্ভব এক স্বপ্নও দেখাতে শুরু করেছিল খালেদের বোলিং

তাসকিনের উপস্থিতি কীভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে, সেটির জন্য আসলে তাকাতে হবে পেসারদের পারফরম্যান্সের দিকে। এই টেস্টে ব্যাটসম্যানরা বড় স্কোর এনে না দিলেও পেসারদের লড়াই ছিল দেখার মতোই। প্রথম ইনিংসে তিন পেসার—খালেদ আহমেদ, ইবাদত হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান করেছেন বেশ আঁটসাঁট বোলিং, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ ছিল দারুণ। দ্বিতীয় ইনিংসে তো অসম্ভব এক স্বপ্নও দেখাতে শুরু করেছিল খালেদের বোলিং।

শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানে হারলেও পেসারদের প্রাপ্য প্রশংসাটা ঠিকই করেছেন অধিনায়ক সাকিব, ‘পেসাররা অনেক দিন ধরেই অনেক ভালো বল করছে। ওদের ভেতরে চেষ্টাটাও অনেক বেশি। যেটা আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে জরুরি। ওরা বিশ্বাস করে যে ওরা অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারে। ওই বিশ্বাসটা ওদের আছে। আমার ধারণা অনেক চেষ্টা করে, ওরা অনেক পরিকল্পনা করে। একসঙ্গে থেকে পরিকল্পনা করে একটা কাজ করার চেষ্টা করে। যে কারণে ওরা আসলে এত বেশি সফল হচ্ছে।’

খালেদদের এমন পারফরম্যান্সের পেছনে যে অনেক বড় ‘ভূমিকা’ আছে তাসকিনের, সাকিব বললেন সেটিই

খালেদদের এমন পারফরম্যান্সের পেছনে যে অনেক বড় ‘ভূমিকা’ আছে তাসকিনের, সাকিব বললেন সেটিই, ‘একটা বড় কৃতিত্ব দিতে হয় তাসকিনকে। তাসকিন আসলে গত দু-তিন বছরে দেখিয়ে দিয়েছে যে কীভাবে আসলে একজন পেসার অনেক বড় হতে পারে, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে কিংবা কীভাবে নাটকীয়ভাবে খুব দ্রুত উন্নতি করতে পারে। আমার মনে হয় ওকে অনেকেই অনুসরণ করে। আমাদের পেসারদের ভালো করার পেছনে এটা একটা বড় কারণ।’

এমনিতে চোট, ফর্ম মিলিয়ে তাসকিনের ক্যারিয়ারের প্রথম ভাগটিকে আক্ষেপে ভরাই বলতে হয়। তবে সেসব কাটিয়ে এখন নিজেকে নতুন করেই চেনাচ্ছেন এই পেসার। তাসকিনের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ইতিহাসেই নতুন বলে মনে করেন সাকিব, ‘এর আগে কেউ মনে হয় নিজের ক্যারেক্টার দেখিয়ে আসেনি। এ রকম কঠোর পরিশ্রম করে, ম্যাচের পর ম্যাচ, যতক্ষণ পারে, ৩০ ওভার, ৩৫ ওভার, ৪০ ওভার—একই গতিতে বল করা। এর আগে খুব বেশি হয়নি। হয়তো হয়েছে মাঝেমধ্যে। কিন্তু এত বেশি কেউ করেনি। তাই তাসকিনকে অনেক বেশি কৃতিত্ব দিতে হয়। এই চিন্তাধারাটা বদলানোর পেছনে ওর অনেক বেশি ভূমিকা আছে।’

তাসকিন কথাগুলো শুনলে খুশিই হবেন। আরও বেশি উদ্দীপিতও।