গত বছর অপহৃত হয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল
গত বছর অপহৃত হয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল

আদালতে পাল্টা অভিযোগ

অপহৃত ম্যাকগিলই কোকেন চোরাচালানে যুক্ত

গত বছর ১৪ এপ্রিল ‘অপহৃত’ হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল। অভিযোগ করা হয়েছিল, অপহরণের পর বন্দুকের মুখে ঘণ্টাখানেক আটক করে রাখার সঙ্গে ম্যাকগিলকে মারধরও করা হয়। এক বছর পর আদালতে ভিন্ন এক দাবি করলেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তাঁদের দাবি, ম্যাকগিলকে অপহরণ করা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক লেগ স্পিনারই বরং মাদক চোরাচালানের ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন, স্বেচ্ছায় তাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন।

ম্যাকগিলের মামলায় সব মিলিয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, এঁদের মধ্যে আছেন ম্যাকগিলের প্রেমিকা মারিয়া ও’মিঘারের ভাই মারিনো সটিরোপলোসও। যে দুজন ‘ভাড়াটে অপহরণকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত, তাঁরা আজ আদালতে হাজির হয়েছিলেন। অভিযুক্তদের বক্তব্য, আসলে পুরো ব্যাপারটিতে জড়িয়ে আছেন ম্যাকগিল নিজেই। এর আগে পুলিশ বলেছিল, ম্যাকগিল পুরোপুরি এ ঘটনার শিকার। তিনি নিজে কোনো অপরাধজনিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল।

মামলার বিচারক বলেছেন, কথিত অপহরণটি ঘটেছে মূলত মাদক চোরাচালানের একটি পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর। ‘সনি’ নামের একজন চোরাচালানকারী অন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন। আদালতে বলা হয়েছে, এই ‘সনি’র সঙ্গে সটিরোপলোসের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাকগিল।

তবে দুই কেজি কোকেন কিনতে জাল টাকা ব্যবহার করেন ‘সনি’, এরপরই গ্রুপটি ম্যাকগিলকে টাকার জন্য চাপ দেয়। তাদের কথা অনুযায়ী, ‘সনি’র হয়ে কথা দিয়েছিলেন ম্যাকগিলই। এ প্রতারণার দায় ম্যাকগিলকেই নিতে হতো, আদালতে এমনও বলা হয়েছে।

অভিযুক্তদের আইনজীবী বলেছেন, ম্যাকগিলের সঙ্গে যা হয়েছে, সেটি নেহাতই বন্ধুত্বপূর্ণ ঘটনা। ম্যাকগিল স্বেচ্ছায় গেছেন, এমনকি ব্রিঞ্জলি পৌঁছে হাত-পা মুক্ত অবস্থায় থাকলেও ম্যাকগিল চলে যাওয়ার সুযোগ নেননি। তাঁকে মারধরের ঘটনাও অস্বীকার করা হয়েছে।

সটিরোপলোসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে অপহরণ, নিষিদ্ধ মাদক সরবরাহ ও শারীরিক ক্ষতি বা ভয় দেখানোর হুমকি দেওয়া আছে। আগামী মাসে আদালতে হাজির হওয়ার কথা তাঁর। অভিযুক্ত অন্য দুজনকে তিনিই ভাড়া করেছিলেন বলেও অভিযোগ।

ম্যাকগিলের কপালে ফুলে ওঠা অংশ দেখেছিলেন তাঁর প্রেমিকা, আদালতে বলা হয়েছে এমন। তবে অভিযুক্তদের আইনজীবী বলেন, সে আঘাত মারধরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জবানবন্দিতে ম্যাকগিল বলেছিলেন, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন তিনি। তবে তাঁর কথার ওপর নির্ভর করা যায় না বলে অভিযুক্তদের আইনজীবী দাবি করেছেন।

ম্যাকগিলের মামলায় সব মিলিয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, এঁদের মধ্যে আছেন ম্যাকগিলের প্রেমিকা মারিয়া ও’মিঘারের ভাই মারিনো সটিরোপলোসও

ম্যাকগিলের আরেকটি অভিযোগও খণ্ডানো হয়েছে আদালতে। ‘বোল্ট কাটার’ দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল—ম্যাকগিলের দাবি ছিল এমন। তবে অভিযুক্ত একজনের গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ‘বাগানের পাতা ছাঁটার যন্ত্র’। আদালতে বলা হয়েছে, এ দুটির পার্থক্য জানার কথা ম্যাকগিলের। একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও দেখানো হয়েছে আদালতে—যেখানে অভিযুক্ত একজন গাড়িতে উঠতে দিচ্ছেন ম্যাকগিলকে। ফলে ম্যাকগিলকে জোর করা হয়নি, দাবি করা হয়েছে এমন। অভিযুক্ত দুজনের জামিন অবশ্য নাকচ করেছেন বিচারক।

১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৪৪টি টেস্ট খেলেছেন ম্যাকগিল। এ সংস্করণে ২০৮টি উইকেট আছে তাঁর।