মারিও লেমোসের হাত ধরে ৩১ বছর পর স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতেছে আবাহনী লিমিটেড। শনিবার ফাইনালে বসুন্ধরা কিংসকে ৩–০ গোলে হারানোর পর দর্শকদের শুভেচ্ছার জবাব দিতে গ্যালারির কাঁটাতারের ফেঞ্চিংয়ের ওপর উঠে দাঁড়িয়েছিলেন লেমোস।
আবাহনীর হয়ে প্রথম শিরোপা ও ফাইনাল নিয়ে কাল প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন ৩৫ বছর বয়সী লেমোস।
মারিও লেমোস: এটা আমার জন্যও প্রথম শিরোপা। মাঠে এক দফা উদ্যাপন শেষে বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গেও খুব আনন্দ করেছি। চেষ্টা করেও রাতে ঘুমাতে পারছিলাম না। বারবার ম্যাচটার কথা ভেবে খুবই রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম। এই ট্রফির সঙ্গে আমার অনেক আবেগ ও ভালোবাসা জড়িত।
লেমোস: স্বাধীনতা কাপের শিরোপাটা আগে থাকবে। এটি আমার প্রথম শিরোপা। আবাহনীরও ৩১ বছর পর স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জয়। ফাইনালে জিতে ট্রফি উঁচিয়ে তোলার আনন্দটাই অন্য রকম।
লেমোস: বিষয়টি আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জের ছিল। সমালোচনা করে বলা হচ্ছিল ‘মারিও জিততে পারে না, মারিও জিততে পারে না।’ আপনি যখন বারবার একটা দলের বিপক্ষে হারবেন, কাজটি চালিয়ে যাওয়া কঠিন। নিজ থেকেই বাড়তি চাপ অনুভব করছিলাম। কালকের জয়ে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাবে।
লেমোস: ধরে নিয়েছিলাম খুব কঠিন একটা ম্যাচ হবে। ভেবেছিলাম জয়–পরাজয় যা–ই হোক, সেটার ফলাফল হবে ১–০, ২–১ বা ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়াবে।
লেমোস: ম্যাচ শেষে আমাকে অভিনন্দন জানালেন। আমিও তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁকে বললাম, ‘তোমার দুর্ভাগ্য দলের অনেক খেলোয়াড় চোটে পড়েছে। না হলে খুব জমজমাট একটা ম্যাচ হতে পারত!’
লেমোস: জোনাথন বড় মাপের খেলোয়াড়। তাঁকে না পাওয়াটা বসুন্ধরার জন্য খুব বড় ক্ষতি, এটা সত্য। তবে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে ম্যাচে রাকিবের (হোসেন) প্রথম গোলটি। আমি বিরতিতেই বলেছিলাম, একটা গোল দিতে পারলে ম্যাচে অনেক গোলের সুযোগ আসবে। তা-ই হয়েছে। প্রথম গোলের পরই বসুন্ধরা ভড়কে যায়। রবসন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু ২–০ হওয়ার পর সেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।
লেমোস: এ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় যোগ হয়েছে। কলিনদ্রেসের মতো ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেওয়া খেলোয়াড় এসেছে। অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও সে দলকে জেতানোর সামর্থ্য রাখে। ডোরিয়েলতন ও মিলাদ শেখের অন্তর্ভুক্তি শক্তি বাড়িয়েছে।
এবার রাফায়েল অগুস্তো আগেই দলের অনুশীলনে যোগ দেওয়ায় ভালো মানিয়ে নিয়েছে। একজনের পক্ষে রাফায়েলকে থামানো কঠিন কাজ। সে দলের কাঠামোটা ঠিক রাখে। এ ছাড়া ইমন বাবু, ফয়সাল (নুরুল নাঈম), সুশান্ত (ত্রিপুরা) এসেছে। এতে দলের গতি, ভারসাম্য ও জয়ের মানসিকতা বেড়েছে। ফাইনালসহ শেষ ৩ ম্যাচে কোনো গোল খাইনি। দুর্দান্ত খেলে তরুণ গোলকিপার প্রিতম আমাকে মুগ্ধ করেছে।
লেমোস: তারা খেলার জন্য ক্ষুধার্ত ছিল। আমি তাদের ক্ষুধাটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। জানতাম তারা ফাইনালে পুরোনো দলের বিপক্ষে সেরাটা উজাড় করে দিয়ে প্রমাণ করতে চাইবে, তারা ভালো খেলোয়াড় ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটাই তারা করেছে।