সুমাইয়াকে খুঁজে পেতে সম্ভব সবকিছুই করেছিলেন তার বাবা জাকির হোসেন ও মা মুনিয়া বেগম। পুলিশ-র্যাব ও বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ধরনা দিয়ে সবশেষে এসেছিলেন প্রথম আলোয়। অনুরোধ ছিল একটা নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর। অপহৃত শিশু সুমাইয়া ২৪ দিন পর ফিরেছিল মা–বাবার কাছে।
ঘটনাটি ২০১৭ সালের। কামরাঙ্গীরচরের বড়গ্রাম এলাকায় মা–বাবার সঙ্গে একটা এক কক্ষের ভাড়া বাসায় থাকত সুমাইয়া। ওই বছরের ২ এপ্রিল বাসার সামনেই অপহরণকারীদের খপ্পরে পড়ে সুমাইয়া। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ জাকির হোসেন স্ত্রী মুনিয়া বেগমকে নিয়ে থানায় যান। নিয়মমাফিক সাধারণ ডায়েরি করেন, যান র্যাবের কাছেও। সপ্তাহখানেক পর মেয়ের ছবিসহ আসেন প্রথম আলোর কাছে। নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তির বদলে ছাপা হয় ছবিসহ একটি প্রতিবেদন। তারপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে পরিবারটি আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছিল না। এরপর ধারাবাহিকভাবে ছবিসহ একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়, অপহরণকারীর নাম-ঠিকানা-ফোন নম্বর ও ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও কেন সুমাইয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে জনমত সৃষ্টি হয়। প্রথম আলোর তোলা প্রশ্ন উচ্চারিত হয় তার পাঠকদের মুখেও।
একপর্যায়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নড়েচড়ে বসে কামরাঙ্গীরচর থানা। ২৬ এপ্রিল উদ্ধার হয় শিশু সুমাইয়া। গ্রেপ্তার হন অপহরণকারীরা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলন করে সুমাইয়াকে উদ্ধারের খবর জানায়। সেখানে মা–বাবার সঙ্গে উপস্থিত হয় সুমাইয়াও।
সুমাইয়া ভালো আছে এখন। বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও সাংসদ তোফায়েল আহমেদ সুমাইয়ার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। একটা চাকরি দিয়েছেন জাকির হোসেনকে। টঙ্গীতে জাকিরের কর্মস্থলের কাছে একটা বাসায় হাসি-আনন্দে বড় হচ্ছে মেয়েটি।