রামু কেন্দ্রীয় সীমাবিহারে পাঠাগার নির্মাণ শুরু

রামু কেন্দ্রীয় সীমাবিহারে অধ্যক্ষ সত্যপ্রিয় মহাথের পাঠাগার ঘুরে দেখছেন
রামু কেন্দ্রীয় সীমাবিহারে অধ্যক্ষ সত্যপ্রিয় মহাথের পাঠাগার ঘুরে দেখছেন

কক্সবাজারের রামু কেন্দ্রীয় সীমাবিহারে পাঠাগারের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় শ্যামল বিকাশ চৌধুরীর উদ্যোগে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সোসাইটির সংগৃহিত তিন লাখ ১০ হাজার টাকায় পাঠাগারটি তৈরি শুরু হয়েছে। এটি নির্মাণ করতে খরচ হবে চার লাখ টাকা। বাকি টাকা দেবে প্রথম আলো ট্রাস্ট। এছাড়া এই পাঠাগারের এক লাখ টাকার বই দেবে প্রথম আলো। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে এই বৌদ্ধবিহার এবং বিহারের ভেতরে পাঁচ হাজারে বেশি দুর্লভ পুস্তক ও ধর্মীয় গ্রন্থসহ পাঠাগারটি ধ্বংস করে। 

সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত আধুনিক মানের কেন্দ্রীয় সীমাবিহারের তৃতীয় তলায় ৯০০ বর্গফুট আয়তনের একটি কক্ষে এই পাঠাগারের নির্মাণকাজ চলছে। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ট্রিম ইনটেরিয়রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসিফ হুদা বলেন, ইতিমধ্যে তাঁরা বই রাখার জন্য এক পাশে দেয়ালে প্রায় ৩১ ফুট লম্বা ও আট ফুট উচ্চতার একটি অত্যাধুনিক তাক নির্মাণ করেছেন। এখানে ছোট-বড় ২৫ হাজার বই রাখা যাবে। ২২ জানুয়ারি কাজ শেষ হবে। 

কেন্দ্রীয় সীমাবিহারের অধ্যক্ষ ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু সত্যপ্রিয় মহাথের কাজের মান তদারক করছেন। সঙ্গে রয়েছেন বিহারের আবাসিক পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি (যুব) রামু উপজেলার সভাপতি সুরেশ বড়ুয়া বাঙ্গালী, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন রামু উপজেলা শাখার সহসভাপতি দুলাল বড়ুয়া, ব্যাংক কর্মকর্তা অলক বড়ুয়া প্রমুখ। 

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে পাঠাগারটি স্থাপিত হওয়ায় সবাই খুশি।
সত্যপ্রিয় মহাথের বলেন, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে রামুর হাজার বছরের বৌদ্ধ সভ্যতা ধ্বংস করে। এই বিহারের পাঠাগারে সংরক্ষিত হাজার বছরের পুরোনো পুঁথিপত্র, বিভিন্ন ভাষার ত্রিপিটক গ্রন্থ, ধর্মীয় গ্রন্থ, গুরুত্বপূর্ণ সাময়িকীসহ অন্তত পাঁচ হাজার বই পুড়ে গেছে। ধ্বংস হয় ছোট বড় ৩০০ মূল্যবান বুদ্ধমূর্তি। এখন শত চেষ্টা করেও এসব ফেরত পাওয়া যাবে না। তার পরও প্রথম আলো ট্রাস্ট এই পাঠাগার নির্মাণে সহযোগিতা দিয়ে বড় দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। পাঠাগারটি স্থাপিত হলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ উপকৃত হবে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রামু কেন্দ্রীয় সীমাবিহারসহ ১২টি প্রাচীন বৌদ্ধবিহার ধ্বংস হয়েছিল। সেনাবাহিনী প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর আধুনিক মানের ১৯টি বৌদ্ধবিহার নির্মাণ করে।