বাংলাদেশে নাগরিক পরিসরে তাঁতের শাড়ি জনপ্রিয় করার প্রেক্ষাপটে আপনার ও টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কীভাবে আপনি এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হলেন?
মুনিরা ইমদাদ: এটা আমি আসলে ১৯৮২ সাল থেকে শুরু করেছি। এর আগে বেইলি রোডে আমাদের জায়গায় ‘ভয়েজার্স ট্রাভেলস’ নামে একটা ট্রাভেল এজেন্সি খুলেছিলাম। কাজটা আমার খুব একটা ভালো লাগল না। আমার বোনের শ্বশুরবাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার। ওখানে যাওয়ার সময় তাঁতিদের গ্রামের পাশ দিয়ে যেতে হতো—পাথরাইল। তখন আমি তাঁতিদের গ্রামে গ্রামে নেমেছি এবং আমার মনে হলো, এত সুন্দর কাপড় বোনে তারা, কিন্তু কালার কম্বিনেশন কিংবা কাপড় হাতে ছোট—এসব নানা কারণে আমরা পরতে পারছি না। শহুরে সমাজের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল না। আমার স্বামীকে বললাম, ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ করে আমি এটা নিয়ে কাজ করতে চাই। সে বলল, ঠিক আছে। তাঁতিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তখন ওদের শাড়ি হতো দশ হাত–সাড়ে দশ হাত। একটা শাড়ি আমার পছন্দ হলো, আমি ওদের বললাম, আমাকে এমন পাঁচটা শাড়ি করে দাও, কিন্তু প্রতিটি শাড়ি হবে বারো হাত কিংবা সাড়ে বারো হাত। ওরা বলল, এত বড় শাড়ি তো বিক্রি হবে না, দাম বেশি হবে। আমি বললাম, সব শাড়ি আমি নিয়ে নেব। এভাবেই শুরু হলো।
টাঙ্গাইলের কোন অঞ্চলে আপনি কাজ শুরু করলেন?
মুনিরা ইমদাদ: পাথরাইল।
কোনো ইতিবাচক ঘটনার কথা কি মনে করতে পারেন?
মুনিরা ইমদাদ: শুরুর দিকে পয়লা বৈশাখের আগে আমার এক কর্মচারী আমাকে ফোন করে একদিন বলে যে, ‘দিদিমণি, দোকানে তো কাপড় নাই।’ কেন? কী হয়েছে? তাড়াতাড়ি এলাম দোকানে। সে বলল, সব কাপড় বিক্রি হয়ে গেছে। পয়লা বৈশাখের আগে।
কোন সালের ঘটনা এটা?
মুনিরা: বোধ হয় ১৯৮৩ সালের ঘটনা। তখন বিচিত্রায় আমার একটা শাড়ি প্রথম হয়েছিল—লাল-কালো, সাড়ে ছয় শ টাকা দামের। ওটার জন্য, দেখতাম, সকাল সাতটা থেকে ক্রেতা দোকানের সামনে দাঁড়ানো।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: শাওন আকন্দ