টিকিট নেই!
সকাল বেলার পাখি হয়ে বাণিজ্য মেলার মাঠে হাজির ফারহানা। সেখান থেকেই ছাড়া হবে নন্দন পার্কে যাওয়ার বাস। মনে বাঁধ ভাঙা আনন্দ। ফারহানা পড়ছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। কিন্তু বিপত্তি বাধল বাসে উঠে। সে যে ভুল করে সংবর্ধনার টিকিটই ফেলে এসেছে। অবশেষে বাবা নিয়ে এসেছেন কাগজ, তারপর যাত্রা শুরু। ‘পরীক্ষা দিতে গিয়েও এত টেনশন হয়নি, নন্দনে যেতে যা হলো!’ ফারহানার কথা। আর ফারহানার কথায় তাল মেলাল তার বন্ধু স্বপ্নীল, ‘আনন্দের উত্তেজনা যখন চোখে-মুখে, তখন কি আর নিয়মের বালাই চলে!’
বাস তারকা!
রিয়েলিটি শোর সময়ে কত রকম তারকারই তো দেখা মিলছে। টেলিভিশন চালু করলেই দেখা মেলে নানা তারকা প্রতিযোগিতার আয়োজন। কিন্তু বাস তারকা! সম্ভবত এই প্রথম। বাস নম্বর, মেয়ে-৪। বাস চলতে চলতেই আয়োজন করা হলো প্রতিযোগিতার। নাম—‘বাস তারকা!’ যেকোনো বিষয়ে যে যার মতো পারফর্ম করবে। আর বিচার করবে কে? সেটাও সহজেই হলো—গণভোট! যার প্রতি বেশি সমর্থন মিলবে, সে-ই হলো বাস তারকা। আর সেই খেতাব প্রথম যে পেল, সে মায়শা। মায়শা থেকে তাই মুহূর্তেই বনে গেল ‘বাস তারকা মায়শা!’
নেপথ্যের চেনা সুর
মঞ্চে বাদ্যযন্ত্র গোছাতে ব্যস্ত যন্ত্রীদল। একটু আগেই গান শেষ করেছেন শিল্পী দিনাত জাহান। এমন সময়ই বেজে উঠল সুর। সে সুর শুনেই সোল্লাসে চিৎকার দিয়ে উঠল সবাই। চেনা সুর। মুখরিত হয়ে উঠল চারপাশ। সে সুর চলল আরও মিনিটি দুয়েক। তারপর মঞ্চে দেখা মিলল নেপথ্যের সেই সুরস্রষ্টাকে। তিনি এস আই টুটুল!
শিক্ষামন্ত্রীর বৃষ্টিতে ভেজা
কৃতী শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে মঞ্চে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তখন বাইরে বৃষ্টি। শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সামনে। কেউ আবার বন্ধুদের সঙ্গে কাদা-ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। এরই এক ফাঁকে শিক্ষামন্ত্রী নেমে গেলেন মাঠে। বৃষ্টিভেজা আর কাদামাখা শিক্ষার্থীরাও হাত মেলালেন মন্ত্রীর সঙ্গে। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে নিজেকে এক প্রকার হারিয়েই ফেললেন মন্ত্রী। অনেকে আবার ছাতা ধরলেন মন্ত্রীর মাথায়। এক শিক্ষার্থী তো বলেই বসল, ‘দেখছ, আমরা এত ভালো ফল করেছি যে মন্ত্রী চলে এলেন আমাদের সঙ্গে কথা বলতে!’
আজ সনদ পাব তো!
সাত হাজার শিক্ষার্থীর সংবর্ধনা ছিল প্রথম দিনে (৪ অক্টোবর)। আর তাই নন্দনের প্রবেশমুখেই ছিল লম্বা লাইন। এরই মধ্যে মুষলধারে বৃষ্টি। লাইন ধরে প্রবেশের আগে তাই অনেকেই ভিজে একাকার। সে লাইন ছিল ভেতরে ঢোকার পরেও। সনদ ও ক্রেস্ট নিতে লাইন। সিমের জন্য লাইন। যেকোনো রাইডে চড়তে লাইন। খাবার নিতে লাইন। যাত্রাবাড়ী থেকে সংবর্ধনা নিতে আসা শিক্ষার্থী তারানা আনজুম তাই নিজের শঙ্কার কথা জানাল এক বন্ধুকে, ‘এত বড় লাইন। আজ সনদ পাব তো!’
এক দুই তিন, শুভ জন্মদিন
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে এলেন অভিনেতা জাহিদ হাসান। শিক্ষার্থীরা তাঁকে দেখে ‘আরমান ভাই’ বলে চিৎকার জুড়ে দিল। তাদের উদ্দেশে কথা বললেন জাহিদ হাসান। মঞ্চ ছেড়ে আসার আগে মস্ত একটা কেক নিয়ে ঢুকলেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক। তাঁর পেছনে রঙিন বেলুন নিয়ে বন্ধুসভার বন্ধুরা। উপস্থাপক বললেন এক দুই তিন, হাজারো কণ্ঠে শিক্ষার্থীরা বলল ‘শুভ জন্মদিন’। নিজের জন্মদিনে এমন উপহারে বিস্মিত জাহিদ তখন উড়ন্ত চুমো ছুড়ে দিলেন শিক্ষার্থীদের দিকে। কেক কাটলেন দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে।
—সজীব মিয়া