শহুরে বাঙালির রান্নাঘরে সব সময় শুধু যে বিদেশি খাবারই গৃহীত হয়েছে, তা নয়। বরং কখনো কখনো মাঝিমাল্লার খাবারও ঠাঁই পেয়েছে তার রান্নায়। তেমনি একটি প্রসিদ্ধ খাবারের নাম ‘গোয়ালন্দ চিকেন কারি’ বা ‘গোয়ালন্দ স্টিমার কারি’। সৈয়দ মুজতবা আলী, ধীরাজ ভট্টাটার্যের মতো লেখকও এই খাবারের সুখ্যাতি করেছেন তাঁদের লেখায়। একসময়ের জনপ্রিয় এই খাবার বিস্মৃতির গহ্বরে তলিয়ে গিয়েছিল সম্ভবত গোয়ালন্দ নদীবন্দর গুরুত্ব হারানোর সঙ্গে সঙ্গে। সম্প্রতি নেটে ছড়িয়ে পড়ে এই খাবারের বিভিন্ন রেসিপি। কিন্তু একাধিক রেসিপি সংগ্রহ করে দেখা গেছে, সেগুলোর সঙ্গে আমাদের সুপরিচিত দেশি মুরগির ঝোলের তেমন পার্থক্য নেই। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সংগ্রহ করা রেসিপিটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে আমাদের কাছে। পাঠকদের জন্য এখানে সেই রেসিপিটি উল্লেখ করা হলো।
উপকরণ: দেশি মুরগি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, হলুদ, লবণ, সরিষার তেল, কুচো চিংড়ি মাছ। সব উপকরণ পরিমাণমতো নিতে হবে।
প্রণালি: পেঁয়াজ কুচি কুচি করে কাটুন। আদা-রসুন-কাঁচা ও শুকনো মরিচও কুচি করে কেটে নিন। এবার মুরগি ভালো করে ধুয়ে একটা পাত্রে রাখুন। কেটে রাখা মুরগিতে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ, হলুদ আর লবণ দিন। পরিমাণমতো সরিষার তেল দিন। এরপর খুব ভালো করে মেখে নিন। এবারে দুই ঘণ্টা রেখে দিন ঢাকনা দিয়ে। মাথা, খোলা ও পা বাদ দিয়ে কুচো চিংড়ি ভালো করে ধুয়ে খুব মিহি করে বেটে নিন। একটা ছোট ডেকচি বা কড়াইয়ে অল্প সরিষার তেল দিন। চিংড়িবাটা মুরগিমাখায় মিশিয়ে দিন। তেল গরম হয়ে গেলে মুরগিমাখা কড়াইয়ে ছাড়ুন। আঁচ কমিয়ে রাখুন। ৩-৪ মিনিট নাড়ুন। তারপর আঁচ একেবারে কমিয়ে দিন আর ঢেকে দিন ভালোভাবে, যেন খুব বেশি বাষ্প বেরিয়ে যেতে না পারে। আধঘণ্টা পর ঢাকনা খুলে আধকাপ পানি দিন। এরপর আবার ঢাকনা চাপা দিয়ে ১০ মিনিট খুব কম আঁচে রান্না করুন। এবার উনুন বন্ধ করে দিন। কিন্তু কড়াইয়ের ঢাকনা খুলুন আরও ১০-১৫ মিনিট পর। ব্যস, হয়ে গেছে আপনার গোয়ালন্দ চিকেন কারি।
খাবারটি প্রস্তুত করেছেন রন্ধনশিল্পী সুরঞ্জনা মায়া