পলান সরকার
কাঁধে বইয়ের ঝোলা, গ্রামে গ্রামে হেঁটে চলেছেন তিনি বই বিলাতে। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পলান সরকারের এই ব্যতিক্রমী কাজ উঠে আসে প্রথম আলোর শনিবারের ক্রোড়পত্র ‘ছুটির দিনে’র প্রচ্ছদ প্রতিবেদন হয়ে। ২০১১ সালে একুশে পদকে মেলে এই কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। পদক নিয়েই চলে আসেন প্রথম আলো কার্যালয়ে। ২০১৪ সালে ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডেতে পলান সরকারকে নিয়ে প্রতিবেদনটি একযোগে ছাপা হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪০টি বড় পত্রিকায়।
নিজেদের কীর্তিতেই উজ্জ্বল তাঁরা। তবে তাঁদেরকে সারা দেশের মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করতেই পারে প্রথম আলো।
মাকসুদুল আলম
পাটের জিন-নকশার আবিষ্কারক তিনি। কিন্তু তাঁকে ‘আবিষ্কার’ করেছিল প্রথম আলো। এনেছিল আলোয়। ‘ পেঁপের পর রাবারের জিন-নকশা উন্মোচন করলেন বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম: উন্মোচিত হোক পাটের জিন-নকশা’–এই খবর পড়ে প্রথম আলোর কাছ থেকে মাকসুদুলের টেলিফোন নম্বর নিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। তাঁর নেতৃত্বে দেশের বিজ্ঞানীরা ২০১০ সালে তোষা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেন।
শাহাদাত হোসেন
সেবার বিনিময়ে টাকার খেলা আর দালালের দৌরাত্ম্য–ভূমি অফিসের প্রচলিত এই চিত্রই বদলে দিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন। রাজশাহীর পবা উপজেলার ভূমি কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার থাকার সময় সেবাপ্রার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় তাঁর উদ্যোগে। অবসান ঘটে হয়রানির। শনিবারের বিশেষ প্রতিবেদন হিসেবে তাঁর এই উদ্যোগের কথা প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের আরও বেশ কটি ভূমি অফিসে অনুসরণ করা হয় সেটি।
খুরশিদা বেগম
টেকনাফ উপজেলার কেরুনতলী নামে সাধারণ এক গ্রাম। সেই গ্রামের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া এক নারী খুরশিদা বেগম পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিশ্বের আরও পাঁচ শ নারীকে পেছনে ফেলে ২০১২ সালে পান জাতিসংঘের ‘ওয়াংগারি মাথাই’ পুরস্কার। কী করেছেন খুরশিদা? গ্রামের আরও ২৭ জন নারীকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন নারী বনরক্ষা দল। পাহারা দিয়েছেন উজাড় হয়ে যেতে থাকা বন। পুরস্কার পাওয়ার অনেক আগেই তাঁকে নিয়ে লেখা হয় প্রথম আলোতে।
কলসিন্দুরের মেয়েরা
কলসিন্দুরের ফুটবলার মেয়েদের চেনে এখন পুরো বাংলাদেশ। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও বিস্তৃত হয়েছে তাদের সাফল্য। তবে ভারত সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার প্রত্যন্ত এই গ্রামের মেয়েদের ‘ফুটবল—বিপ্লব’—এর খবর প্রথম সবাইকে জানিয়েছিল প্রথম আলোই। কলসিন্দুরের ১৮ জন মেয়ে ফুটবলারকে বৃত্তিও দিয়ে আসছে প্রথম আলো। এই মেয়েদের কল্যাণে স্কুলে পাকা ভবন হয়েছে, বিদ্যুৎ গেছে গ্রামে। বদলে গেছে একটা জনপদ।