একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে বাঙালিদের ওপর চালানো পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার পরিকল্পনার অংশবিশেষ
১. আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড ও প্রতিক্রিয়াকে বিদ্রোহ হিসেবে দেখা হবে এবং যারা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করবে ও এমএল বা সামরিক আইনকে বিরোধিতা করবে, তাদের শত্রুপক্ষীয় উপাদান হিসেবে দেখা হবে।
২. যেহেতু সেনাবাহিনীর ইপি [পূর্ব পাকিস্তানি] উপাদানের মধ্যেও আওয়ামী লীগের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে, সে কারণে সেনাবহিনীর মধ্যে অভিযান চালাতে হবে সর্বোচ্চ ধূর্ততা, ছলনা ও দ্রুততার সঙ্গে। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে প্রচণ্ড আঘাত।
সফলতার জন্য প্রাথমিক চাহিদা
৩. প্রদেশের সব জায়গায় একযোগে অভিযান চালাতে হবে।
৪. রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতা এবং শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে যারা চরমপন্থী, তাদের সর্বোচ্চ সংখ্যায় গ্রেপ্তার করতে হবে।
৫. ঢাকায় অভিযান শতভাগ সফল হতে হবে। এ জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হবে এবং তল্লাশি করতে হবে।
৬. সেনানিবাসের নিরাপত্তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। যারা সেনানিবাসে আক্রমণের দুঃসাহস দেখাবে, তাদের বিরুদ্ধে গোলাবর্ষণের সর্বোচ্চ ও যথেচ্ছা ব্যবহার করতে হবে।
৭. সব রকমের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বিছিন্ন করতে হবে। বিদেশি কনস্যুলেটের সঙ্গে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, রেডিও, টেলিভিশন, টেলিপ্রিন্টার সার্ভিস ও ট্রান্সমিটার বন্ধ করে দিতে হবে।
৮. পাকিস্তানি সেনারা অস্ত্রাগার ও গোলাবারুদ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানি সেনাদের নিষ্ক্রিয় করবে। পাকিস্তান বিমান বাহিনী এবং ইপিআরের জন্য একই ব্যবস্থা নিতে হবে।
চমক ও ধোঁকা
৯. উচ্চপর্যায়ে: অনুরোধ করা যাচ্ছে যে রাষ্ট্রপতি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার স্পৃহা দেখাবেন, এমনকি মুজিবকে এভাবে প্রতারিত করে হলেও যে, জনাব ভুট্টো সম্মত না হলেও তিনি আওয়ামী লীগের দাবি ও অন্যান্য কিছু মেনে নিয়ে ২৫ মার্চ ঘোষণা দেবেন।
আ স্ট্রেনজার ইন মাই ঔন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান: ১৯৬৯-১৯৭১, মেজর জেনারেল (অব.) খাদিম হুসাইন রাজা