আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সেভেন রিংস্ সিমেন্ট ও প্রথম আলোর আয়োজনে ‘নির্মাণ ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনায় নারী’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশিত হলো।
রূপালী চৌধুরী
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বার্জার
তাহমিনা আহমেদ
পরিচালক, সেভেন রিংস্ সিমেন্ট
নাজনীন আরা কেয়া
চিফ ইঞ্জিনিয়ার, বাংলাদেশ রেলওয়ে
তেহেসীন জোহের
পরিচালক, বিএসআরএম
নাসিমা ইসলাম
প্রধান স্থপতি, আর্কিটেকচারাল ডিজাইন কনসালট্যান্ট
শায়কা ইমাম শান্তা
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (বি. আর্ক)
সালমা বেগম
দোলা এন্টারপ্রাইজ, কুমনবাজার, জয়দেবপুর
আতিক আকবর
ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন, সেভেন রিংস্ সিমেন্ট
সূচনা বক্তব্য
আব্দুল কাইয়ুম
সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো
সঞ্চালনা
ফিরোজ চৌধুরী
সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো
আমাদের যোগাযোগব্যবস্থা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীদের জন্য সহায়ক নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা নিরাপত্তার। এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।
করোনার বাস্তবতায় বাসায় থেকে কাজ করার বিষয়টি সামনে এনেছে। বাসায় আমাদের এত কিছু দেখাশোনা করতে হয় যে অফিসের মনোযোগটা দেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে বাসায় বিভিন্ন কাজে পুরুষ সদস্যদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
নির্মাণ ব্যবসায় অনেক সময় বেশি রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কারও ছোট শিশু থাকলে সমস্যা হয়। বেশির ভাগ নির্মাণে রাতে ঢালাই হয়। অনেক ক্ষেত্রে টয়লেটের ব্যবস্থা থাকে না। এসব সমস্যার সমাধান হলে হয়তো নারীদের অংশগ্রহণ বাড়বে।
অনেক সময় নিয়োগকর্তা মনে করেন, একজন মেয়েকে দিয়ে তো অফিসের বাইরের কাজ করানো যাবে না। তাই কাজের ধরন অনুযায়ী অনেকে মেয়েদের নিয়োগ দিতে চান না। মেয়েদের ব্যাপারে এসব দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো জরুরি।
নির্মাণ ব্যবসা একটা বড় জগৎ। এখানে ধৈর্য, আগ্রহ, ইচ্ছা না থাকলে এ পেশা তাঁর জন্য কঠিন। এটাই ব্যবসার চ্যালেঞ্জ। এখানে নারী–পুরুষ আলাদা কোনো বিষয় নয়। যিনিই ব্যবসায় আসবেন, তঁাকেই এ সময় দিতে।
জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সময় আবেগের বশবর্তী না হয়ে সেই মানুষটা উদার কি না, তার কাছে আপনার স্বাধীনতা আছে কি না, সে বিষয়গুলো দেখে নেওয়া উচিত
প্রতিটি অফিস ও কারখানায় নারীরা যেন সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, নারী-পুরুষের অনুপাত যেন মেনে চলা হয়। প্রত্যেক নিয়োগকর্তার এ বিষয়ে আন্তরিক হওয়া জরুরি।
আব্দুল কাইয়ুম
নির্মাণ ব্যবসা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। প্রতিনিয়ত এ খাত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। আত্মমর্যাদা বাড়ছে। বিভিন্ন খাতে নারীরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন। কিন্তু নির্মাণ খাতে তাঁদের উপস্থিতি যতটা আশা করছি, তেমন এখনো হয়নি।
আমাদের কেন নারী দিবস পালন করতে হয়? কারণ, সারা পৃথিবীতে নারীর প্রতি বৈষম্য রয়েছে। এটা উন্নত বিশ্বেও আছে। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো রাষ্ট্রেও নারী একটা পর্যায়ে যাওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রে আর এগোতে পারেন না। আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নারীর উন্নয়নে অনেক এগিয়েছি। এখন সবক্ষেত্রে বাবার নামের সঙ্গে মায়ের নাম দেওয়ার বিধান হয়েছে। আমাদের নারীদের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় অর্জন।
আজকের আলোচনায় নারীদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা আসবে। এটা নারীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।
করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে নারীদের। যখন স্কুল বন্ধ হলো, তখন থেকে নারীদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সংসারের কাজের সঙ্গে ছেলেমেয়েদের অনলাইনে পড়ানোর মতো চাপ তাঁদের নিতে হয়েছে। অনেক নারীর প্রযুক্তি সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। এ ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাঁরা একধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছিলেন। আমাদের নারীরা খুব দক্ষতার সঙ্গে সেটা সামাল দিয়েছেন। এই সময় আমাদের অধিকাংশ নারীকে প্রায় ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে।
আবার যাঁরা চাকরিজীবী নারী, তাঁদের একই সঙ্গে চাকরি করতে হয়েছে, সংসারের কাজ করতে হয়েছে, আবার সন্তানদের দেখাশোনা করতে হয়েছে। পুরুষদের কিন্তু নারীদের তুলনায় এত চাপ ছিল না। সবার উচিত নারীদের সহযোগিতা করা।
আমাদের প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সেন্টার করেছি। এভাবে সব প্রতিষ্ঠান যদি এগিয়ে আসে, তাহলে নারীরা কর্মক্ষেত্রে আরও ভূমিকা রাখতে পারবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীর উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি চান নারীরা যেন সব ক্ষেত্রে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। পুরুষেরা যদি নারীদের আরেকটু সহযোগিতা করেন, তাহলে তাঁরা আরও এগিয়ে যেতে পারবেন।
নির্মাণ ব্যবসাসহ প্রায় সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্যে পুরুষের যেভাবে গ্রহণযোগ্যতা আছে, নারীর সেভাবে নেই। আমাদের যে যোগাযোগব্যবস্থা, সেটা নারীদের জন্য সহায়ক নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা নিরাপত্তার। একজন পুরুষ যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে যাওয়া-আসা করতে পারেন, একজন নারীর জন্য সবক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়। নারীকে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হয়। এসব জায়গায় কার্যকর উদ্যোগ নিলে নারীরা আরও বেশি নির্মাণ ব্যবসায় যুক্ত হতে পারবেন।
আমি মনে করি, একজন নারীর আত্মবিশ্বাসটা অনেক বড় ব্যাপার। তাঁর যদি আত্মবিশ্বাস থাকে, সাহস ও মানসিকতা থাকে, তাহলে তিনি যেকোনো কাজই করতে পারবেন বলে মনে করি। এখন এসব সমস্যা অনেক কমে এসেছে। আগের মতো সীমাবদ্ধতা নেই। চাইলেই একজন নারী তাঁর পছন্দমতো পেশা বেছে নিতে পারেন।
তরুণ প্রজন্মের নারীরা অনেক বেশি সৃজনশীল। তাঁরা চাইলে যেকোনো কিছু করতে পারবেন। নিজের গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে একটু আলাদাভাবে চিন্তা করতে হবে। দেশে নির্মাণ ব্যবসা এখন অত্যন্ত সম্প্রসারণশীল। নারীরা যেটা করেন, খুব ভালোভাবে মন দিয়ে করেন। নির্মাণ ব্যবসায়ও নতুন প্রজন্মের নারীরা ভালো করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
প্রথম আলো-সেভেন রিংস্ সিমেন্টকে ধন্যবাদ জানাই। এ ধরনের আলোচনা বারবার হওয়া প্রয়োজন। তাহলে নারীরা আরও বেশি আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠবেন। এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন। আজকের আলোচক নাসিমা আপাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমরা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। তিনি একইভাবে সংসার দেখেছেন। আবার সাফল্যের সঙ্গে নির্মাণ খাতে কাজ করছেন।
স্থাপত্য ও নির্মাণ একটা চ্যালেঞ্জিং পেশা। নারীদের জন্য সেটা আরও চ্যালেঞ্জের। কিন্তু প্রতিটি সমস্যার মধ্যে একধরনের সমাধান আছে। কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সমস্যা থেকেই সেটা জানা যায়। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মধ্য দিয়ে নিজের পেশার প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। প্রতিমুহূর্তে নারীর প্রমাণ করতে হয় যে আমি পারি। এ জন্য প্রায় সব সময় পুরুষের তুলনায় আমাদের দ্বিগুণ কাজ করতে হয়।
করোনাকালে বাসায় থেকে সব কাজ করা সম্ভব হয়নি। বাসায় আমাদের এত কিছু দেখাশোনা করতে হয় যে অফিসের মনোযোগটা বাসায় বসে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই করোনার মধ্যেও আমাকে একবার অফিসে যেতে হয়েছে। একজন নারীর বাসায় যে কাজের চাপ থাকে, সাধারণত একজন পুরুষের সেটা থাকে না। তিনি কিন্তু বাসায় থেকে কাজ করতে পারেন। নারীদের একটা বাড়তি চ্যালেঞ্জ সব সময় থাকে। আমি অবশ্য পরিবারের কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছি। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেই আমাদের এগোতে হবে। আমাদের মানসিকতা যেন এমনভাবে তৈরি হয়।
আমি অনেক সময় দিনের বেলায় কাজ করতে পারিনি। তখন রাত জেগে করেছি। নির্মাণ ব্যবসার ক্ষেত্রে নারীদের সমস্যা অনেক। আমিও সে সমস্যার ঊর্ধ্বে নই। আমাকে অনেক বেশি সময় দিতে হয়। কাজ করতে হয়। নির্মাণ ব্যবসায় নারীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। তবে নির্মাণ খাতে কাজ করতে গিয়ে আমি অনেকের সাহায্য পেয়েছি। আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি। আমি সমস্যাকে আসলে সমস্যা মনে করিনি।
নেতিবাচক দিকও অনেক আছে। মেয়ে হিসেবে অনেক সময় প্রশ্ন করা হয় যে আপনার লোকবল কত। কম্পিউটার কয়টা? আপনি কি পারবেন? অর্থাৎ আমি যখন প্রতিযোগিতায় নামি, তখন এমন এমন ক্ষেত্রে প্রমাণ করতে হয়, যেসব ক্ষেত্রে একজন পুরুষকে প্রমাণ করতে হয় না। আমি কত ভালো স্থাপত্যবিদ, তার থেকে আমাকে বেশি প্রমাণ করতে হয় আমার সঙ্গে কোনো পুরুষ আছে কি না। মনে হয় প্রতিটা পেশায় নারীকে এভাবে প্রমাণ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে পুরুষের সহযোগিতা বিশেষভাবে প্রয়োজন।
আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেছি। কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি মারা যান। তারপর ব্যবসাটা নিজে দেখা শুরু করেছি। এখনো দক্ষতার সঙ্গে চলিয়ে নিচ্ছি। অনেক ধরনের পণ্য আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আছে। সেভেন রিংস্ কোম্পানির কাছ থেকে সিমেন্ট নিই। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে রড নিই। আশপাশের সবাই আমাকে সহযোগিতা করে। প্রথম দিকে এ ব্যবসা পরিচালনা করতে অনেক সমস্যা হয়েছে। একটা ব্যবসা একা চালানো খুব কষ্টকর। এখন আমাদের আর সমস্যা হচ্ছে না। সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছি।
সকাল আটটায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আসি। তারপর দুপুর পর্যন্ত থাকি। দুপুরে বাসায় গিয়ে সংসারের কিছু কাজ করি। আবার বিকেলে এসে রাত আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত থাকি। রড-সিমেন্ট ছাড়াও অনেক পণ্য বিক্রি করি। ইট, বালুসহ অনেক হার্ডওয়্যার পণ্য আমার প্রতিষ্ঠানে আছে। সেসবও বিক্রি করি।
নারীরা এখন প্রায় সব কাজ করছেন। নির্মাণ খাতের ব্যবসাও নারীরা সফলতার সঙ্গে করতে পারবেন বলে মনে করি। এ ব্যবসা করতে তাঁদের কোনো সমস্যা হবে না। তাই যেকোনো নারী চাইলেই নির্মাণ খাতের ব্যবসা করতে পারেন।
নির্মাণশিল্পে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। পুলিশ, সেনাবাহিনী, জনপ্রতিনিধি—মনে করা হতো এসব জায়গায় পুরুষেরা আসবেন। কিন্তু এখানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এসব ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় নির্মাণশিল্পে নারীর অংশগ্রহণ এখনো কম। ২০০১ সালের আগে বাংলাদেশ রেলওয়েতে কোনো নারী ইঞ্জিনিয়ার ছিল না। তখন আমরা চারজন নারী ইঞ্জিনিয়ার যোগদান করি। প্রায় ২০ বছর পর এখন এ সংখ্যা হলো ১৯।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ইঞ্জিনিয়ারের ১০ শতাংশ নারী। কিন্তু এলজিইডি, পিডব্লিউডি—সেখানে অবশ্য নারীদের সংখ্যা বেশি। নির্মাণ নকশার কাজে নারীদের ভালো উপস্থিতি আছে। কিন্তু নির্মাণ ব্যবসা যদি বলি, তাহলে সে ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ আশানুরূপ নয়। অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন নির্মাণকাজ অনেক কঠিন। নারীদের দ্বারা এটা সম্ভব নয়। কিন্তু সেই নারীরা ইট, পাথর ভাঙছেন, মাটি কাটছেন—সবই করছেন। ভারী কাজ যে তাঁরা করতে পারেন, সেটা প্রমাণ করেছেন।
তাঁরা ঢালাইয়ে কংক্রিট টেনে নিচ্ছেন। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পে কাজ করছেন। শারীরিক সক্ষমতার জন্য নারীরা যে পিছিয়ে পড়ছেন, তা কিন্তু নয়। তাহলে কেন নির্মাণ ব্যবসায় নারীরা আসছেন না, সেটা একটা চিন্তার বিষয়। সামাজিক নিরাপত্তা, টেন্ডার প্রক্রিয়া—এসব তাঁদের নিরুৎসাহিত করছে কি না, সে বিষয়টিও দেখা দরকার। আবার নির্মাণকাজের সময় ঠিক থাকে না। অনেক সময় বেশি রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কারও ছোট শিশু থাকলে তাঁদের জন্য সমস্যা হয়। বেশির ভাগ নির্মাণে রাতে ঢালাই করতে হয়, যাতে ঢালাই ভালো হয়।
বেতনের তারতম্য এখনো আছে। আগে আরও অনেক বেশি ছিল। অনেক সাইটে টয়লেটই থাকে না। নারী হলে তাঁকে আশপাশের বাসায় গিয়ে অনুরোধ করতে হয় যে আপনাদের টয়লেট ব্যবহার করতে চাই। এমন কিছু সমস্যার সমাধান হলে হয়তো সাইটে নারীদের উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু ব্যবসায় কী করলে নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়বে, সেটা হয়তো সমাজবিজ্ঞানীরা ভেবে দেখতে পারেন।
নারীরা সব ধরনের কাজই পারেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নারীরা ইংল্যান্ডের রেলপথ চালু রেখেছিলেন। সেভেন রিংস্ সিমেন্ট, বার্জার, বিএসআরএমসহ বিভিন্ন জায়গায় নারীরা আছেন। তাঁদের এই অংশগ্রহণ যেন টেকসই হয়, কাজের পরিবেশ যেন অনুকূল থাকে—এসব বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। আশা করি ভবিষ্যতে নির্মাণ ব্যবসায় নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়বে।
মেয়েরা লেখাপড়া শেষ করছে। পেশায় আসছে। বিয়ে হচ্ছে। সন্তান হচ্ছে। এর প্রতিটি ধাপে তাকে সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। চাকরির ক্ষেত্রেও সমস্যা আছে। অনেক সময় একজন নিয়োগকর্তা মনে করেন, একজন মেয়েকে দিয়ে তো দৌড়ানোর কাজ করানো যাবে না। তাকে হয়তো শুধু টেবিল ওয়ার্কই দিতে হবে। এ জন্য অনেক সময় নিয়োগকর্তা তাদের কাজের ধরন অনুযায়ী মেয়েদের নিয়োগ দিতে চান না। বিয়ে হলেও মেয়েদের নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। আবার নিজের পেশাটাকেও ঠিক রাখতে হয়। তারপর মা হলে নতুন একধরনের টানাপোড়েন শুরু হয়। এত কিছুর পরও যদি আপনি পেশায় থেকে যেতে পারেন, তারপর শুরু হয় আপনার আসল পরীক্ষা। একটা কথা আমাকে প্রায়ই শুনতে হয়, আপনার টাকাপয়সার কী দরকার?
তারা চিন্তা করছে না আমার সন্তানকে রেখে কেন কাজ করছি। এসব প্রশ্ন অনেক সময় বিব্রত করে। তারপরও এর উত্তর দিতে হয়। আমি মেনে নিয়েছি, আমাকে এভাবেই এগোতে হবে। কাজ আমি ভালোবাসি, তাই কাজ করছি।
অনেকে পাস করছে। নির্মাণ পেশায় না এসে তারা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। এটা খুব দুঃখজনক যে আজকের দিনেও আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হবে না। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে না। এটা ভাবতে পারি না।
ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েদের বৈষম্যের মধ্য দিয়ে বড় হতে হয়। তারপর কর্মজীবনেও এ বৈষম্য থেকে যায়। নির্মাণ ব্যবসা হলো ২৪ ঘণ্টার কাজ। রাতে-দিনে যেকোনো সময় আপনাকে এ কাজের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অন্যান্য পেশার মানুষেরা বাসায় এলে তাদের কোনো প্রেশার থাকে না। কিন্তু নির্মাণ ব্যবসায় এটা সম্ভব নয়। আমাকেও অনেক সময় রাত একটা–দুটোর সময় বাসায় আসতে হয়। বাসা দূরে হলে রাতে থাকার ব্যবস্থা করতে হয়।
নির্মাণে একটা কথা প্রচলিত আছে, বকাঝকা না করলে কাজ হয় না। আমি এটা বিশ্বাস করি না। কিন্তু বাস্তবতাটা এমনই। আবার নারীরা বকাঝকা দিলেও ওরা সেটাকে গুরুত্ব দেয় না। এসব কারণে মেয়েরা এ পেশায় হয়তো আসে না।
শিশু বয়স থেকেই পড়ালেখা করালে হবে না। এমনভাবে শিক্ষাটা দিতে হবে, সে যেন মানুষকে সম্মান করতে পারে। তার আচরণ যেন ভালো হয়। সে যেন মানবিক মানুষ হয়। প্রত্যেকের ভালো মানুষ হওয়াটা জরুরি। শুনেছি জাপানে নাকি সাত বছর পর্যন্ত আচরণ শেখানো হয়।
আজকের এই গোলটেবিলে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নারীরা যে প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছেন, সামনে আসছেন, ঘর থেকেই তাঁরা এ অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন। ব্যবসাজগতে আমার হঠাৎই আসা। আমি ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ল্ডে ছিলাম। তারও আগে সংসারে ঢুকেছি। সংসারও আমাকে তৈরি করেছে। এখান থেকে চ্যালেঞ্জ নিতে শিখেছি। বাইরের জগৎ ও সংসারের পার্থক্য করতে শিখেছি। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছ থেকেও শিখেছি। চড়াই-উতরাই যেমন নারীর জীবনে থাকে, তেমনি পুরুষের জীবনেও আছে।
একজন নারী তাঁর সৃজনশীলতা, ব্যক্তিত্ব ও পারিবারিক শিক্ষা দিয়ে নিজের অবস্থানকে শক্ত করতে পারেন। আমাদের দেশের প্রবণতা হলো, পরিবারে ছেলের জন্য ব্যাট-বল, মেয়ের জন্য পুতুল। নিজের পরিবার থেকেই একটি মেয়ে জেনে যায় তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। ব্যতিক্রমও আছে। কিছু পরিবারে ছেলে–মেয়ের মধ্যে পার্থক্য করা হয় না। সমান গুরুত্ব দিয়ে মানুষ করা হয়।
প্রতিবছর আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীরা খুব যে পিছিয়ে আছেন, তা নয়। তাঁরা পুরুষদের সঙ্গে চলছেন। অনেক বাধাবিপত্তি আছে। সে জন্য আমাদের নিজেদের তৈরি করতে হবে। আমি নিজে যদি মনে করি পারব না, তাহলে নিজেকে একটা বৃত্তে বন্দী করে ফেলছি। আমার নিজস্ব শক্তি কতটুকু, সেটা আমিই বুঝতে পারব। সংসারজীবন থেকে আমি যখন বাইরে আসি, তখন পৃথিবীটাকে আমার খোলা আকাশের মতো মনে হয়েছে।
সমস্যা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আপনি যখন কোনো বিপদে পড়বেন, তখন সে সমস্যার সমাধান করতে শিখবেন। সমস্যাকে ইতিবাচকভাবে দেখতে হবে। যখন সমস্যায় পড়েছি, তখন সেটা সমাধানের চেষ্টা করেছি। আমি বিশ্বাস করেছি সমাধান আছে। বিপদই আমাকে শক্ত হতে শিখিয়েছে। আমার পারিবারিক ঐতিহ্য হলো ব্যবসা। আমার জিনে হয়তো ব্যবসা আছে। কিন্তু নিজে কখনো ব্যবসা করব, সেটা ভাবিনি। ২০০১ সালে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ইন্টেরিয়রের কাজ শুরু করি। তখনই বিশ্বাস ছিল যে আমি পারব। এই সাহসটা অবশ্য পরিবার থেকেই পেয়েছি। আমরা মানি বা না মানি, আমাদের নারীদের শিক্ষাটা মা-বাবা, ভাইবোনদের কাছ থেকে আসে। আমাদের সালমা বেগম যে সফলভাবে ব্যবসা করছেন, তিনিও কারও না কারও হাত ধরেই এ ব্যবসায় এসেছেন।
এখন আমাদের অর্থনীতিতে নারীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। আমাদের পোশাকশিল্পের অধিকাংশই নারী। আমাদের দর্শন হওয়া উচিত, ভাঙব কিন্তু মচকাব না। ভেঙে ভেঙে আমাদের শক্ত হতে হবে। ওপরে উঠতে হবে। আজকে নারীদের এই উত্তরণ কিন্তু নারীরাই সৃষ্টি করেছেন।
নির্মাণ ব্যবসা একটা বড় জগৎ। এখানে ধৈর্য না থাকলে, আগ্রহ, ইচ্ছা না থাকলে নির্মাণ পেশা তাঁর জন্য কঠিন হবে। এটাই ব্যবসার চ্যালেঞ্জ। এটা না দিতে পারলে সফল হবেন না। এখানে নারী–পুরুষ আলাদা কোনো বিষয় নয়। যিনিই ব্যবসায় আসবেন, তাঁকেই এ সময় দিতে হবে। যে নারী ওপরে উঠতে চান, বাধা পেরিয়েই তাঁকে ওপরে উঠতে হয়। শুধু নারী দিবস, মাদার, ফাদার, ভ্যালেন্টাইনস ডে নয়, আমার প্রতিটি দিন আমি কীভাবে পালন করব, সেটা আমাকেই ঠিক করতে হবে।
যে পরিস্থিতি হয়তো নিজে ম্যানেজ করতে পারছেন না, এর জন্য অন্য কারও সাহায্য নিতে পারেন। সাহস থাকলে সমাজের প্রতিটি জায়গায় যাওয়া যায়, প্রতিটি কাজ করা যায়। চ্যালেঞ্জ শুধু নারীর নয়, পুরুষেরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
আপনি যখন কোথাও কাজ করবেন, তখন আপনাকে সেখানে শুধু ১০০ শতাংশ নয়, ২০০ শতাংশ মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। নারীর পিছিয়ে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। যত বাধাই আসুক, তাঁকে পথ চলতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে।
নারীদের নিজেদের জীবনের সিদ্ধান্ত তাঁদের নিজেদের নিতে হবে। তবে শিক্ষাজীবনে অনেক শিক্ষার্থী হয়তো ঠিকমতো জীবনের সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে মা–বাবা–অভিভাবকেরা গাইড করেন। সেটা ঠিক আছে। অনেক মেয়ে মনে করেন, আমার পড়াশোনা শেষ হয়েছে। আমি বিয়ে করব। আমার সব দায়িত্ব স্বামী নেবে, আমি স্বচ্ছন্দ জীবন কাটাব। এখন মেয়েরা বুঝতে পারছেন, সে জীবনের কোনো গ্যারান্টি নেই। যেকোনো সময় সংসারের অায় কমে যেতে পারে। যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আমি মনে করি, মেয়েরা এমন একটা পেশা বেছে নেবেন, যেন তাঁরা স্বাবলম্বী হন। নির্মাণশিল্পে যেসব নারী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে এসেছেন, তাঁরা কেন এসেছেন; কারণ, তাঁদের আর কোনো বিকল্প নেই। কাজ না করলে তিনি খেতে পারবেন না। তাঁর স্বামী তাঁর খাবারের ব্যবস্থা করছেন না। কোনো মানুষ যখন অস্তিত্বসংকটে পড়বে, তখন সে যেকোনো কাজই করবে।
এখন মধ্যবিত্ত পরিবারের সংকটগুলো কিন্তু বিভিন্ন ধরনের। কোনো কোনো মা–বাবা চান তাঁদের মেয়ের বিয়ে হোক, তারপর স্বামী যদি কাজ করতে দেয়, তাহলে সে কাজ করবে। এই কথার মধ্যে একটা ফাঁক রয়ে গেছে।
আমার জেন্ডার-আমি নারী। এটা আমার ব্যক্তিত্ব ও মানবিক ভাবনাকে পরিবর্তন করে দিতে পারে না। আমি নারী, এটা একটা বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। আমাকে ভাবতে হবে, আমি মানুষ। আমি যদি আমার জেন্ডার নিয়ে বিব্রত না থাকি, তাহলে মানুষ হিসেবে যে কাজগুলো আমার করার কথা, সেগুলো আমাকে করতে হবে। অনেক ছেলেই এখন চাকরি পাচ্ছে না। দেশে লাখ লাখ মানুষ বেকার, সেখানে ছেলেও আছে, মেয়েও আছে।
নিজেকে মেয়ে ভেবে বসে থাকলে হবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। শুধু ভালো শিক্ষার্থী হলেই হবে না, লিডারশিপে দক্ষ হতে হবে। আমি যখন পেশায় যাচ্ছি, তখন আমাকে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এখানে পারদর্শী হতে হবে।
বলা হয়, ঠিকাদারি কাজে অনেক সময় অনেক লবিং থাকতে হয়। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে হয়। মেয়েরা নিষ্ঠা ও ন্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে চান। তাই অনেক কাজে তাঁরা উৎসাহ বোধ না–ও করতে পারেন।
এখন মধ্যবিত্তের ধারণা এসেছে, বিয়ে দিলে সমাধান হয় না। এটা তাদের মানসিকতার একটা বিরাট পরিবর্তন। নারীদের বেতনবৈষম্য কমে গেছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে এটা নেই। একটা বিষয় এখনো নিয়োগকর্তাদের মধ্যে কাজ করে, সেটা হলো কমপক্ষে দুবার মাতৃত্বকালীন ছুটি দিতে হবে। তখন তাঁর কাজ করবে কে? এটা ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দেয়। আপনি এমনভাবে কাজ করবেন, কোম্পানি যেন মনে করে আপনাকে তাঁর প্রয়োজন। আপনাকে ছুটি দিয়েও সে রাখতে চেষ্টা করবে।
সর্বোপরি একজন নারীকেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে হবে যে তিনি যা চান, সেটা করতে পারবেন। তাঁর সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য নেই। একজন নারীর নিজেকেই সব ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। এই সংগ্রামটা নারীদের করে যেতে হবে।
নারীকে যেমন অনেক কিছু সহ্য করতে হয়, তেমনি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর একজন মানুষকেও এটা সহ্য করতে হয়। মনে করতে হবে এটা যে বলেছে তাঁর সমস্যা। যাদের বলছে তাদের সমস্যা নয়। যে বলছে সে নিজেকে ছোট করছে।
জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সময় আবেগের বশবর্তী না হয়ে সেই মানুষটা উদার কি না, তার কাছে আপনার স্বাধীনতা আছে কি না, সে বিষয়গুলো দেখে নেওয়া উচিত। শেষ কথা হলো, নারীদের বিশ্বাস রাখতে হবে যে আমিই সব পারব।
সেভেন রিংস্ সিমেন্ট পঁাচ বছর ধরে নারী দিবসে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এ ধরনের আয়োজন করে যাচ্ছে। যত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
আছে, এর মধ্যে নির্মাণ ব্যবসা নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয়। নির্মাণ ব্যবসায় নারীদের সমস্যা যেন নিরসন হয়, তাঁরা যেন এ ব্যবসায় সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, সে জন্য সেভেন রিংস্ সিমেন্ট প্রতিবছর এ ধরনের আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে।
আমাদের অফিস ও কারখানায় নারীরা অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে কাজ করেন। আমাদের ম্যানেজমেন্ট এ ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে বিশ্বের বৃহত্তর ৫০০ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ৪৪ শতাংশ নারী নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছেন। সেখানে মাত্র ৩ শতাংশ নারী নির্মাণ সাইটে কাজ করেন। এটা হলো বিশ্ববাস্তবতা। তাই এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা কি হতে পারে সেটা সহজে বোঝা যায়।
আমাদের আজকের আলোচনায় যেসব সম্মানিত নারী এসেছেন, তাঁরা নিজেদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল। জয়দেবপুরের সালমা বেগম আমাদের তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।
আপনারা প্রত্যেকে আমাদের রোল মডেল। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনাদের কাছ থেকে শিখবে। আমরা আশা করব ভবিষ্যতে কোনো উৎপাদন কারখানার চিফ টেকনিক্যাল অফিসারও নারী থাকবেন।
আশা করি একসময় নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না। এ জন্য আমাদের দিক থেকে যা করা দরকার, সাধ্যের মধ্যে সেটা করে যাব। আপনাদের সবাইকে আমাদের পক্ষ ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি।
আলোচনায় এসেছে নারীরা যেমন প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি বিভিন্ন পর্যায়ে বাধার সম্মুখীনও হচ্ছেন। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, নারীরা সব বাধা অতিক্রম করে সামনে আসছেন।
আমরা প্রত্যাশা করি, নারীদের সমস্যা নিরসনে নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।