তাবুতে সাকিনার রহস্যময় ইতিহাস

তাবুতে সাকিনা অভিশপ্ত সিন্দুক নামে পরিচিত। রহস্যময় এ সিন্দুকটি অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন। আল্লাহর পক্ষ থেকে সিন্দুকটি বনী ইসরাইল সম্প্রদায়কে দিয়েছিলেন হজরত মুসা (আ.)।

মুসার (আ.)–এর মৃত্যুর পর তাঁর সান্নিধ্যধন্য নবী ইউশা ইবনে নুন সিন্দুকটির তত্ত্বাবধান করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর এর দেখাশোনা করতেন বনী ইসরাইল সম্প্রদায়ের পুরোহিতেরা। সিন্দুকটির অলৌকিক ক্ষমতা আছে বলে তারা বিশ্বাস করত। তারা বিশ্বাস করত, এই সিন্দুক সঙ্গে থাকলে কেউ তাদের পরাজিত করতে পারবে না।

কিন্তু সিন্দুকটি নিয়ে একটি সংকট তৈরি হয়। যেখানেই এটি রাখা হতো তার আশপাশের লোকজনের মধ্যে মহামারি ছড়িয়ে পড়ত। এতে বেশ কিছুদিন তারা সিন্দুকটিকে বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত করে। নানা স্থানে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে। উপায়ন্তর না দেখে তারা সিন্দুকটিকে একটি গরুর গাড়িতে করে অজানার উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয়।

সেই সিন্দুক বাদশাহ তালুতের হস্তগত হয়। তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। কোরআনে তাঁর এবং সিন্দুকটির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে, ‘বনী-ইসরাইলদের তাদের নবী আরও বললেন, তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে যাতে থাকবে তোমাদের পালকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের প্রশান্তি, আর তাতে থাকবে মুসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ইমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৪৮)

এরপর সিন্দুকটি হজরত দাউদ (আ.)-এর হাতে আসে। তিনি তাঁর সন্তান হজরত সোলায়মান (আ.)-কে এর তত্ত্বাবধানকারী হিসেবে নিযুক্ত করেন। হজরত সোলায়মান (আ.) আল্লাহর নির্দেশে জেরুজালেমে তার উপাসনালয় নির্মাণের সময় সেখানে সিন্দুকটি স্থাপন করেন এবং সুরক্ষার জন্য একটি বিশেষ স্থান তৈরি করেন। তার মৃত্যুর অনেক বছর পর ব্যাবিলনবাসীরা জেরুজালেম দখল করে উপাসনালয়টি ধ্বংস করে দেয়। সিন্দুকটির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।