আফগানিস্তানের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইরান, পাকিস্তান, চীন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান। আফগানিস্তানে ৯৯ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আফগানিস্তান সরকারিভাবে রমজানকে স্বাগত জানায়। সেই উপলক্ষে পয়লা রমজান সরকারি ছুটির দিন।
রমজানকে বরণ করে নিতে আফগানদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। রমজান বরণ করে নেওয়াকে তাঁরা নিজেদের জন্য বরকতের কারণ মনে করেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আরবি পত্রিকা ‘আশ-শারকুল আওসাত’ এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছে যে আফগানিরা রমজান আসার আগেই নিজেদের বাড়িঘর সুন্দর কাপড়, কার্পেট ও বিছানা সাজিয়ে তোলেন। যাঁরা একটু অর্থসংকটে থাকেন, তাঁরা নিজের বাড়িঘরের কাপড়চোপড় ধুয়ে সুঘ্রাণ যুক্ত করেন। রমজানে তাঁরা এই মাসের নাম দিয়েছেন আল্লাহর মেহমানদারির মাস।
আফগানিস্তানে রোজার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ ঘণ্টা। এই দীর্ঘ সময় পর তাঁরা যে ইফতারের আয়োজন করেন, সেখানে রয়েছে আফগানদের নিজস্ব সংস্কৃতি। ইফতারের শুরুতে তাঁরা খেজুর খেলেও এর পাশাপাশি টেবিলে থাকে পুঁইশাক, আলু ও অন্যান্য সবজি।
তবে আফগানি বুলানি এমন একটি বিশেষ খাবার, ইফতার ও সাহ্রিতে যা আফগানদের কাছে সমান সমাদৃত। আফগানি বুলানি একটি বিশেষ রুটি, অনেকটা আমাদের দেশের আলুপুরির মতো। ভেতরে আলু, পেঁয়াজ, বাদাম, সবজি দিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। কোথাও কোথাও আমাদের দেশের শিঙারার মতো ভেতরে কলিজা বা ভেড়ার শুকনা গোশত ব্যবহার করা হয়। ধনী–গরিব সবার কাছেই আফগানি বুলানির বিশেষ চাহিদা আছে।
আফগানদের ইফতারির টেবিলে সুরওয়া নামের একধরনের স্যুপ থাকে। সঙ্গে থাকে রুটি, ভেড়ার গোশতের দোপেঁয়াজা, মুরগির কাবাব, খাসির কাবাব। মিষ্টিজাতীয় খাবারের মধ্যে থাকে শিরনি আর পায়েস। পুরো আফগানিস্তানে বড় ঐতিহ্য কাবুলি পোলাও। আমাদের দেশের রুহ আফজার মতোও তাঁদেরও একটি পানীয় আছে। তাঁদের ইফতারে পাকোড়া আর আমানতু আশ থাকে। পাকোড়া বানানো হয় মুরগির গোশত, আলু ও ঘি দিয়ে।
ইফতারির পর সবাই দল বেঁধে ছোটে মসজিদে। মসজিদেও থাকে ইফতারের আয়োজন।