পবিত্র কোরআন প্রথম নাজিল হয়েছিল জাবালে নূরে

মক্কায় কাবা শরিফের কাছেই জাবালে নূর বা হেরা পর্বত। এ পর্বতে ওঠানামা বেশ কঠিন। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিয়মিত এ পর্বতে ওঠানামা করতেন। জাবালে নূর পর্বতে উঠতে সময় লাগে সোয়া ঘণ্টা, আর নামতে লাগে আধা ঘণ্টা। মহানবী (সা.) এ পাহাড়ে ধ্যান করতেন। পবিত্র কোরআন প্রথম নাজিল হয়েছিল এখানে। আরবিতে জাবাল মানে পাহাড়, জাবালে নূর অর্থ নূরের পাহাড়। পাহাড়ের কিছু অংশে পাকা সড়ক রয়েছে। কিছু গাড়ি সে পর্যন্ত যায়। এরপর শুরু হয়েছে পাহাড় কেটে তৈরি সিঁড়ি। এখানে সাইনবোর্ডে লেখা আছে, জাবালে নূরের উচ্চতা ৫৬৫ মিটার; অর্থাৎ আধা কিলোমিটারের বেশি উচ্চতা। পাকা সড়ক পর্যন্ত দুই পাশে দোকানপাট ও বাড়িঘর গড়ে উঠেছে।

এঁকেবেঁকে সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় সিঁড়ি বেশ খাড়া। কিছুদূর উঠে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসার জায়গা করা হয়েছে। পথে পানি, চা ও ঠান্ডা পানীয় বিক্রি হয়।

সিঁড়ি ধরে উঠতে গিয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থেকে আসা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, যখন কোনো রাস্তাঘাট ছিল না, তখন কীভাবে নবীজি (সা.) নিয়মিত এই পাহাড়ের চূড়ার গুহায় যাতায়াত করেছেন। খাদিজা (রা.)-ই বা কীভাবে নবীজি (সা.)-এর জন্য এখানে খাবার দিয়ে যেতেন?

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যেখানে ধ্যান করতেন এবং পবিত্র কোরআন শরিফের আয়াত যেখানে নাজিল হয়েছে, সেসব জায়গা দেখতে পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়।

জাবালে নূরে সকালে আর বিকেলে যাওয়া যায়। সাইনবোর্ডে লেখা আছে, সেখান থেকে জাবালে নূর বা গারে হেরার উচ্চতা ৫৬৫ মিটার। রাস্তার পাশে দোকানপাট, বাড়িঘর গড়ে উঠেছে। পাহাড়ের একটি স্থান থেকে দেখা যাচ্ছিল অনেক লোক ওপরে উঠছেন। সিঁড়ি এঁকেবেঁকে ওপরে উঠে গেছে। এখন ওপরে ওঠা আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে। কিছুদূর উঠে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। পথে এ রকম পাঁচটি বিশ্রামাগার দেখতে পাই।

এ পথের বাঁকে বাঁকে ফকিরেরা শুয়ে-বসে ভিক্ষা চাইছেন। আরেক দল লোক আছে, যাঁদের দেখলে মনে হবে তাঁরা রাজমিস্ত্রি। বালু-সিমেন্ট নিয়ে এমনভাবে অপেক্ষা করছেন, যেন আপনি সিঁড়ির ধাপটিতে ওঠার পর তিনি মেরামতের কাজ শুরু করবেন। কিন্তু তিনি তা করছেন না। নানা কথা বলে টাকা আদায় করছেন। পথে পানি, চা, ঠান্ডা পানীয় বিক্রি করছেন অনেকে। ওপরে উঠতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। পাহাড়ে উঠতে উঠতে আমাদের মনে হচ্ছিল, যখন কোনো রাস্তাঘাট ছিল না, তখন কেমন করে নবীজি (সা.) দীর্ঘদিন এ পাহাড়ের চূড়ার গুহায় যাতায়াত করেছেন।