ইজতেমায় প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর লম্বা সময় নিয়ে বয়ান (ধর্মীয় বিষয়ে বক্তৃতা) করা হয়। জোহর ও আসরের সময় বয়ান হয় ছোট পরিসরে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশেষ শ্রেণি–পেশার মানুষ যেমন ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবী আলেমদের নিয়ে আলাদা বয়ান হয়। এ সময় ইজতেমার মাঠে অন্যরা তালিমের কাজে ব্যস্ত থাকেন।
বয়ান সাধারণত ভারত ও পাকিস্তানের আলেম ও মুরব্বিরা (তাবলিগের অভিজ্ঞ ও নেতৃস্থানীয় সদস্য) করে থাকেন। বয়ান উর্দু ভাষাতে হয়। এটা সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তবে বাংলাদেশের কেউ বয়ান করলে সরাসরি বাংলায় করেন।
শুধু কয়েকটা বয়ান শুনে কেউ ইসলাম ধর্ম পালন করবেন, এমনটি ভাবার কারণ নেই। বিশাল জামাতে গিয়ে কেউ যখন একনাগাড়ে দ্বীনি পরিবেশে কিছুটা সময় থাকেন, তাঁর জন্য ইসলাম মানা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। এ জন্য ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে ও অন্যদের জানাতে ইজতেমাসহ দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে মানুষকে বাইরে বের করার চেষ্টা করা হয়। ইজতেমা হলে এটিকে উপলক্ষ করে জামাতবদ্ধভাবে এ কাজে বের হওয়া সহজ হয়।
বয়ানে দ্বীনের দাওয়াতের গুরুত্ব ও ইমান–আমলসংক্রান্ত কথা বলা হয়। ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের ত্যাগসহ বিভিন্ন ঘটনাবলি উল্লেখ করা হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষ দ্বীনের কাজে উৎসাহিত হন। এ জন্য দেখা যায়, সারা বছর জামাতের জন্য যত মানুষ বের হন, ইজতেমার পর এর চেয়ে অনেক বেশি জামাত বের হয়। মূলত ইজতেমায় ইমান ও আমলের কথা বলা হয়, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শেখানো হয়, নবীদের জীবনী পাঠ করে শোনানো হয়, নফল নামাজ পড়তে উৎসাহিত করা হয়। অনেক বড় জামাতের সঙ্গে এসব আমল সম্মিলিতভাবে করা হয়। {তথ্যসূত্র: তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিসরে, বুলবুল সিদ্দিকী, প্রথমা প্রকাশন ২০১৯}