প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান পবিত্র কাবায় হজ পালনে সমবেত হন। গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের মক্কায়
প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান পবিত্র কাবায় হজ পালনে সমবেত হন। গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের মক্কায়

হজযাত্রীরা আজ মিনার উদ্দেশে রওনা দেবেন

পবিত্র হজ পালন করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সৌদি আরবের মিনার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন আজ বৃহস্পতিবার। মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনা। মিনায় কেউ যাবেন গাড়িতে, কেউ হেঁটে। হজের অংশ হিসেবে তাঁরা ৭ থেকে ১২ জিলহজ মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় অবস্থান করবেন।

মুয়াল্লেমরা জানান, বৃহস্পতিবার এশার নামাজ আদায় করে মিনার উদ্দেশে রওনা দেবেন তাঁরা। ছয় দিন পর আবার হাজিরা বাসায় ফিরবেন। তাই মিনায় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নিতে হবে। পুরুষ হাজিরা মক্কার বাসায় অজু-গোসল সেরে সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় পরে হজের নিয়ত করবেন। ইহরামের কাপড় (আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের ৩ গজ কাপড়) এক সেট পরে নিতে হবে, অতিরিক্ত আরেক সেট থাকবে ব্যাগে।

এ ছাড়া এক সেট সাধারণ পোশাক (শার্ট-প্যান্ট অথবা পাঞ্জাবি-পায়জামা), পেস্ট, ব্রাশ, সাবান, চার্জারসহ মুঠোফোন, কোরবানির কুপন (৭২০ রিয়ালে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক থেকে কুপন কিনতে হয়), মুজদালিফায় রাতে ঘুমানোর জন্য হালকা বিছানাসহ প্রয়োজনীয় জিনিস ছোট ব্যাগে নিলে ভালো হয়। কারণ, নিজের ব্যাগ নিজেকে বহন করতে হবে। মুয়াল্লেম শুধু খাবারের ব্যবস্থা করবেন।

মক্কার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে পারে। আর্দ্রতা থাকবে ৮৫ শতাংশ। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।

হাজিরা ৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন থাকবেন। ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। আরাফাতের ময়দান থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন হাজিরা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন তাঁরা।

এরপর কোরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ (সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত দৌড়ানো) শেষে মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান ও প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ হাজিদের ভাগ ভাগ করে জামারাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।

চলতি বছর নুসুক কার্ড ছাড়া কেউ হজ করতে পারবেন না। সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হজযাত্রী প্রতিরোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড এবং আবার অপরাধে দ্বিগুণ জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। হজের অনুমতি নেই, এমন কোনো ব্যক্তিকে পরিবহন করা হলে পরিবহনকারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। মিনা, আরাফায় হাজির তাঁবুতে নুসুক কার্ড ছাড়া
কাউকে পাওয়া গেলে অর্থদণ্ড আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকে। হজের জন্য মিনা, আরাফা, মুজদালিফা, মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে চাইলে এই কার্ড অবশ্যই দেখাতে হবে।