আরবি শিক্ষা ত্রয়োদশ শতকে বাংলায় মুসলিম বিজয় সূচিত হওয়ার আগে এ দেশে আসা সুফিদের উদ্যোগেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম প্রচার এবং সেই সূত্রে আরবি শিক্ষার সূত্রপাত ঘটে। এই সুফিদের কয়েকজন হলেন: শায়খ আহমদ, ইবনে হামজা নিশাপুরী, বাবা আদম শহীদ, শাহ মোহাম্মদ সুলতান রুমী, শাহ সুলতান মাহিসওয়ার এবং মখদুম শাহ দৌলা শহীদ। এঁরা ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্থানে মসজিদ, খানকাহ ও মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন।
এ ছাড়া বাংলায় মুসলিম শাসন কায়েম হওয়ার পর ধর্মপ্রচারে আত্মনিবেদিত সুফি-সাধকদের দ্বারাও এ দেশে বহু শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মওলানা তকীউদ্দীন আল-আরবি (মৃত্যু ১২৯১ খ্রি.) রাজশাহীর মাহীসুনের মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এটিকে এ দেশের প্রথম মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলে অভিহিত করা হয়। এ মাদ্রাসায় আরবি ও ইসলামি বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়া হতো। শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা সম্ভবত ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার সোনারগাঁয় একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
ভারতবিদ ম্যাক্স মুলারের বিবরণ থেকে জানা যায়, ইংরেজ শাসনের আগে বাংলায় প্রায় ৮০ হাজার মাদ্রাসা চালু ছিল, যাতে আরবি ভাষা শেখানো হতো। ইংরেজ আমলে প্রথমে ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে হুগলিতে একটি এবং তারপর ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও তিনটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামি শিক্ষার প্রচলিত ধারাটিকে যুগোপযোগী করার উদ্দেশ্যে ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘নিউ স্কিম মাদ্রাসা’ নামে মাদ্রাসা-শিক্ষার আরেকটি ধারা চালু করা হয়। ১৯৪৭ সালে কলিকাতা মাদ্রাসা ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। কওমি মাদ্রাসা নামে মাদ্রাসা-শিক্ষার আরও একটি ধারা বহুকাল আগে থেকেই বাংলাদেশে প্রচলিত আছে। এগুলোতে আরবিশিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং আরবি ব্যাকরণ শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়।
বাংলায় মুসলিম শাসন কায়েম হওয়ার পর ধর্মপ্রচারে আত্মনিবেদিত সুফি-সাধকদের দ্বারাও এ দেশে বহু শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মওলানা তকীউদ্দীন আল-আরবি (মৃত্যু ১২৯১ খ্রি.) রাজশাহীর মাহীসুনের মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এটিকে এ দেশের প্রথম মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলে অভিহিত করা হয়। এ মাদ্রাসায় আরবি ও ইসলামি বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়া হতো। শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা সম্ভবত ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার সোনারগাঁয় একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
মুসলমানরা আরবিকে পবিত্র ভাষা মনে করেন। কারণ, এই ভাষাতেই ‘আল্লাহ কথা বলেছেন’, এই অর্থে যে এই ভাষায়ই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। অবশ্য সব ভাষাই আল্লাহর, আর পবিত্র কোরআনের আগে তিনি অন্য ভাষায়ও ঐশী বাণী পাঠিয়েছেন। যেমন, পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত বেশির ভাগ নবী হিব্রুতে কথা বলতেন। ঈসা (আ.) হিব্রুর শাখা-ভাষা আরামাইকে কিতাব পেয়েছেন। আরবি ভাষা শেখা বা আরবিতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব অন্যখানে। প্রথমত, এই ভাষা পবিত্র কোরআনের সঠিক বুৎপত্তিগত অর্থ সংরক্ষণ করছে। ভাষান্তর বা অনুবাদে যার পার্থক্য সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয়ত, যখন নামাজে আরবি উচ্চারণ করা হয়, তখন ভাষার ঐক্য পৃথিবীর শত কোটি মুসলিমকে এক কাতারে দাঁড় করায়।
সূত্র:‘ আরবি শিক্ষা ’যার যা ধর্ম, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন, ২০১৪