ইসলামে প্রবীণদের প্রতি কর্তব্য

প্রবীণদের প্রতি সচাদরণ করতে এবং সম্মান জানাতে অনেক নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। প্রবীণদের সম্মান, মর্যাদা এবং অধিকার সুরক্ষা করতে একাধিক হাদিসে তাগিদ দিয়েছেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। অনেক পুরস্কার, উপকারিতা ও প্রতিদানের ঘোষণাও তিনি দিয়েছেন।

নবীজি (সা.) বলেছেন, প্রবীণদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষাকারীরা কিয়ামতের দিন সব ভয়ভীতি ও বিপদ থেকে নিরাপদ থাকবে।

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তির সংবাদ দেব না? তারা বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে দীর্ঘায়ু লাভ করে এবং সুন্দর আমল করে।’

হাদিসে আরও আছে, ‘নিশ্চয়ই শুভ্র চুলবিশিষ্ট মুসলিমকে সম্মান করা আল্লাহকে সম্মান করার শামিল।’ (আবু দাউদ)

রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘প্রবীণদের সঙ্গেই তোমাদের কল্যাণ ও বরকত আছে।’

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তিনবার বললেন, তার নাক ধুলায় লুটাক। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, কার নাক? হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, সেই ব্যক্তির যে তার বৃদ্ধ পিতামাতার একজনকে অথবা উভয়কে পেল। অথচ তাদের খিদমত করে জান্নাত লাভ করতে পারল না। (মুসলিম)

প্রবীণ ও জ্ঞানী লোকের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখাতে নসিহত করেছেন হজরত আলী (রা.)। তিনি বলেছেন, ‘জ্ঞানীকে তার জ্ঞানের জন্য, বৃদ্ধকে তার বয়সের জন্য শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে হবে।’

মা–বাবা বার্ধক্যে উপনীত হলে তাঁদের সঙ্গে আচরণ কেমন করতে হবে; সে সম্পর্কেও কোরআনে আল্লাহ এভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, ‘আর তোমার রব আদেশ করেছেন যে তোমরা তাঁকে (আল্লাহকে) ছাড়া অন্য কারও উপাসনা করো না এবং তোমরা মা–বাবার প্রতি সদাচরণ করো। তাঁদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হন, তাহলে তুমি তাঁদের সঙ্গে “উফ্” শব্দটিও করো না এবং তাঁদের ধমক দিও না। তাঁদের সঙ্গে নরমভাবে কথা বলো। আর তাঁদের প্রতি মমতাবশে নম্রতার ডানা বিছিয়ে দাও আর বলো (তাঁদের জন্য দোয়া করো)—হে আমার রব, তুমি তাদের প্রতি দয়া করো যেমন তারা আমাকে ছোটকালে দয়াবশে প্রতিপালন করেছিলেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৩-২৪)