রমজানে প্রতি মুহূর্তেই রহমত বর্ষিত হতে থাকে। সবচেয়ে বেশি রহমত থাকে রমজানের শেষ দশ দিনে। শেষ দশদিন তাই এমন একটি সময়, যখন নিজের আত্মার সমৃদ্ধি এবং পরিচর্যার জন্য বেশি জোর দিতে হয়।
প্রত্যয় নিয়ে নামতে হবে
সহিহ্ বুখারিতে আছে, আয়েশা (রা.) বলেছেন, রমজানের শেষ দশদিন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নবীজি (সা.) কোমর বেঁধে ইবাদতে নেমে পড়তেন এবং নিজের পরিবারবর্গকেও সারা রাত জেগে ইবাদত করতে বলতেন।”
নবীজি (সা.)–এর অতীত–বর্তমান সব গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেওয়া সত্ত্বেও শেষ দশদিন তিনি ইবাদতে মশগুল হতেন।
রমজানের প্রথম বিশ দিন পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেও শেষ দশদিন নবীজি (সা.) পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন। এই দশটি দিন তিনি আল্লাহর সঙ্গে একান্ত কাটানোর জন্য নির্ধারণ করতেন। তাই মনোযোগে ব্যাঘাত তৈরি করার মতো জাগতিক বিষয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহর জন্য সময় দিতে হবে।
ইবাদতে বৈচিত্র্য
ইবনে রজব (র.)–এর বর্ণিত এক হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) শেষ দশদিন এমনভাবে ইবাদতে মশগুল থাকতেন যা তিনি আর কোনো সময় থাকতেন না। শেষ দশদিন তিনি রাত জেগে সালাত আদায় করতেন, জিকির ব্যস্ত থাকতেন এবং কোরআন তিলাওয়াত করতেন।
ইবাদতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। নামাজ, জিকির, কোরআন পাঠ—বিভিন্ন ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহকে অনুভব করা যায়। ইবাদতে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
মানুষ যাকে যত বেশি ভালোবাসে, তার সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে ততই পছন্দ করে। একইভাবে বান্দা যত বেশি তার রবকে জানে, তাঁর সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে ততই প্রশান্তি অনুভব করে। ইতিকাফই সেই আমল, যা সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়।
আবু হুরাইরা এবং আয়েশা (রা.)–সহ আরও অনেকে বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতি বছর ইতিকাফ করেছেন। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কখনো ইতিকাফ ত্যাগ করেননি।