জাহেলি যুগে হজরত শিফা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) পিঁপড়ার কামড় আর সাপে কাটার মন্ত্র দিতেন। অজ্ঞানতার সেই যুগে নারী হয়েও তিনি ছিলেন শিক্ষিত ও শিক্ষানুরাগী। নিজের শিক্ষা তিনি আরব নারীদের ওপর কাজে লাগিয়েছিলেন। তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)–এর নির্দেশে তাঁর স্ত্রী হাফসা (রা.)–কে অক্ষরজ্ঞান দিয়েছিলেন। হজরত শিফা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) ছিলেন নিরাময়শাস্ত্রে অভিজ্ঞ এক নারী।
হজরত শিফা (রা.)–এর কাছ থেকে আমরা ১২টি হাদিস পেয়েছি। তাঁর বর্ণনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস এ রকম: ‘রাসুল (সা.)–কে সর্বোত্তম আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, আল্লাহর ওপর ইমান, আল্লাহর পথে জিহাদ এবং হজে মাবরুর বা আল্লাহর কাছে গৃহীত হজ।
শিফা (রা.)–র জন্ম মক্কার কুরাইশ বংশে। মক্কায় যে কজন নারী সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর কাছে বাইয়াত করেন, তিনি তাঁদের একজন।
রাসূল (সা.)–এর প্রতি তাঁর ছিল গভীর ভালোবাসা। রাসুল (সা.) তাঁর এ সম্মানকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি মাঝেমধ্যে শিফার ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নিতেন। শিফা (রা.) তাঁর ঘরে রাসুল (সা.)–এর জন্য একটি বিছানা ও একটি পোশাক বিশেষভাবে রেখে দিতেন। রাসূল (সা.) তাঁর বাসায় গেলে তা ব্যবহার করতেন। শিফা (রা.)–র ইন্তেকালের পর তাঁর সন্তানেরা সেসব যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করেন।
উমর (রা.) শিফা (রা.)–কে বিশেষ মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতেন। তাঁর মতামতের গুরুত্ব দিতেন। তাঁর যোগ্যতার কারণে উমর (রা.) তাঁকে বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শিফা (রা.)–র কাজ ছিল, ব্যবসা–বাণিজ্য ইসলামি শরিয়াহ মেনে হচ্ছে কিনা, তার তদারক করা। তিনি বাজার ঘুরে কোনো ক্রেতা বা বিক্রেতা মূল্যবোধ–পরিপন্থী কোনো কাজ করছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করতেন। তা নিয়ে খলিফাকে প্রতিবেদন দিতেন।
শিফা (রা.)–এর ইন্তেকালের সঠিক সময় জানা যায় না। তবে অনেক ঐতিহাসিক বলেন, উমর (রা.)–এর খিলাফতের সময়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।