সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ২০০৭ সালে এক নিবন্ধে দাবি করেছিলেন যে মুসলিম বিশ্ব এখনো পশ্চিমা দুনিয়া থেকে শতবছর পিছিয়ে আছে। তিনি ইসলামকেই ’ইসলামী বিশ্বের প্রকৃত সমস্যা’ হিসেবে অভিহিত করেন। পশ্চিমা বিশ্বে দুঃখজনকভাবে ইসলাম সম্পর্কে এ রকম পক্ষপাতদুষ্ট ধারণা বেশ প্রচলিত। সে কারণেই ইসলামী সভ্যতা নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণারও কমতি নেই।
ইতিহাসবিদ ও সাংবাদিক জাস্টিন ম্যারুজি এ ধরনের অজ্ঞতাপ্রসূত নেতিবাচক ধারণার বিপরীতে তুলে ধরেছেন প্রাচ্যের ১৫টি নগরের সমৃদ্ধ ইতিহাসের গল্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামী সভ্যতার উত্থান ও অবদানের একটি ছবি আঁকার চেষ্টা করেছেন। তারই ফল হিসেবে ইসলামিক এম্পায়ারস: ফিফটিন সিটিজ দ্যট ডিফাইন এ সিভিলাইজেশন (ইসলামী সাম্রাজ্য: একটি সভ্যতার নির্ণায়ক পনেরোটি নগরে কাহিনী) বইতে উঠে এসেছে বহুমুখী এক অভিন্ন সম্প্রদায় ও তাদের চমকপ্রদ অর্জনের কাহিনী যা গড়ে তুলেছিল ইসলামী সাম্রাজ্যের ঋদ্ধ অতীত।
বইটি পাঠককে সফর করিয়ে নিয়ে আসবে পনেরো শতক ধরে বিস্তৃত পনেরোটি ঐতিহাসিক শহরে—সপ্তম শতকের মক্কা থেকে শুরু হয়ে যা শেষ হয়েছে একুশ শতকের দোহায়। পাঠক জানতে পারবেন দামেস্ক, বাগদাদ, করদোবা, জেরুজালেম, কায়রো আর ফেজ কীভাবে মুসলিম সভ্যতার পাদপীঠ হয়ে উঠেছিল। সমরখন্দ, কনস্টান্টিনোপল, কাবুল, ইস্পাহান আর ত্রিপোলির নানা বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে ঘুরিয়ে ম্যারুজি পাঠককে নিয়ে যান বৈরুত, দুবাই ও সবশেষে দোহায়।
ফাইনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় বইটির আলোচনায় বলা হয়েছে, এটা ঠিক যে এক সময়ে সভ্যতায় অবদান রাখা আরব মেধার সাক্ষ্যধারী মধ্যপ্রাচ্য আজকে কর্তৃত্ববাদ, অসহিষ্ণুতা ও যুদ্ধদ্বন্দ্বের বিশাল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। এক সময়ে ইসলামী সভ্যতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল সুশাসন, যা এখন ইসলামের বেশিরভাগ প্রাণভূমিতেই অনুপস্থিত। ফলে আজকে যখন ইসলামী দুনিয়া নানা ঝড়-ঝাপটা ও অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তখন ম্যারুজি বলতে চান যে ইসলামের ইতিহাসের বিভিন্ন মহত্তম অর্জনকে যেন পাঠক ভুলে না যায়।
ইসলামিক এম্পায়ারস: ফিফটিন সিটিজ দ্যট ডিফাইন এ সিভিলাইজেশন; জাস্টিন মারুজি; অ্যালেন লেন, লন্ডন; ২০১৯