রাসুলে করিম (সা.) তাঁর অনুগামীদের ওপর নিদারুণ উৎপীড়ন প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছেন। তাঁর গায়ে কেউ হাত দিতে পারছে না, কারণ (এক) আল্লাহ্র সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক; (দুই) পিতৃব্য আবু তালিবের সহায়তা। রাসুলে করিম (সা.) তাঁর অনুগামীদের রক্ষা করতে পারছেন না। তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা ইচ্ছা করলে আবিসিনিয়ায় চলে যেতে পারো, সে-ই তোমাদের জন্য ভালো হবে। ওখানকার রাজা অন্যায়-অবিচার সহ্য করেন না, আর ওটা আমাদের বন্ধু দেশ। ওখানে থাকবে, একদিন আল্লাহ্ তোমাদের দুঃখ দূর করবেন।’ ধর্মান্তর ও পৌত্তলিকদের ধর্ম নিয়ে শঙ্কাগ্রস্ত তাঁর অনুগামীরা তখন আবিসিনিয়ায় হিজরত করল। ইসলামে এটিই ছিল প্রথম হিজরত।
যেসব মুসলমান প্রথমে গিয়েছিলেন, তাঁরা হলেন বনু উমাইয়া, বনু আবদু শামস—সঙ্গে স্ত্রী সাহলা বিনতে সুহায়ল ইবনে আমর, বানু-আসাদ ইবনে আবদুল উজ্জা, বনু জুহরা ইবনে কিলাব, বনু মাখজুম ইবনে ইয়াকজা—সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী উম্মে সালামা বিনতে আবু উমাইয়া ইবনে আল মুগিরা, বনু জুমাহ ইবনে আমর ইবনে হুসায়স, বনু আদি ইবনে কাব—তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী নায়েলা বিনতে আবু হাসমা ইবনে হুজায়ফা, বনু আমির ইবনে লুসাই আবু সাবারা ইবনে আবু রুহম ইবনে আবদুল উজ্জা ইবনে আবু কায়েস...ইবনে আমির—তিনি প্রথম আবিসিনিয়ায় পৌঁছান এবং বনু আল-হারিস।
আমার জানামতে, আবিসিনিয়ায় প্রথম হিজরতকারী ছিলেন এই ১০ জন।
পরে গিয়েছিলেন জাফর ইবনে আবু তালিব। তাঁদের অনুসরণ করে গেল একের পর এক মুসলমান। সবাই গিয়ে জমায়েত হলো আবিসিনিয়ায়। কেউ সপরিবার, কেউ একা।
সহগামী বা পরে জাত শিশু ছাড়া আবিসিনিয়ায় হিজরতকারীদের সংখ্যা ছিল তিরাশি।
অনুবাদ: শহীদ আখন্দ
প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)’ বই থেকে