আসিয়া বিনতে মুজাহিম, প্রাচীন মিসরে ফেরাউনের স্ত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন এক আল্লাহ–বিশ্বাসী মহীয়সী নারী। ছিলেন মানুষের প্রতি দয়ালু ও সহানুভূতিশীল। তাঁর স্বামী ফেরাউন নিজেকে খোদা বলে দাবি করত। সে ছিল অত্যাচারী ও বদমেজাজি বাদশাহ।
আসিয়া ফেরাউনের স্ত্রী ছিলেন ঠিকই, কিন্তু ফেরাউনের কোনো স্বভাব তাঁকে গ্রাস করতে পারেনি। তিনি এক আল্লাহর ওপর ইমান আনেন। নিজের স্ত্রী অন্যের উপাসনা করে, এমন খবর জানতে পেরে ফেরাউন তাঁকে বোঝাতে থাকেন। কিন্তু আসিয়া সত্য ধর্মের ওপর পর্বতের মতো অবিচল, অটল।
ফেরাউন তখন লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করে আসিয়াকে হত্যার আদেশ দেয়। তার সৈন্য-সামন্তরা আসিয়ার হাত-পা বেঁধে উত্তপ্ত সূর্যের নিচে ফেলে রাখে। ক্ষতবিক্ষত করা হয় শরীর। তবুও তিনি ইমান ছাড়েননি। জীবনের বিনিময়ে ইমান রক্ষা করেন।
আসিয়া দুনিয়ার রাজপ্রাসাদের বিনিময়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন জান্নাতে আল্লাহর পাশে একটি ঘর। তাঁর প্রার্থনার কথা কোরআনে এভাবে আছে, ‘আল্লাহ বিশ্বাসীদের জন্য উপস্থিত করেছেন ফেরাউন-পত্নীর দৃষ্টান্ত, যে প্রার্থনা করেছিল, “হে আমার প্রতিপালক! তোমার কাছে জান্নাতে আমার জন্য একটা ঘর তৈরি করো, আমাকে উদ্ধার করো ফেরাউন ও তার দুষ্কর্ম থেকে, আর উদ্ধার করো সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায় থেকে।”’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ১১)
সুরা তাহরিমের শেষে দুই ব্যক্তি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে তার একজন হজরত নুহ (আ.)–এর অবিশ্বাসী স্ত্রী, দ্বিতীয়জন অবিশ্বাসী ফেরাউনের বিশ্বাসী স্ত্রী আসিয়া।
কোরআনে আছে, ‘আল্লাহ অবিশ্বাসীদের জন্য নুহের ও লুতের স্ত্রীর দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছেন। ওরা ছিল আমার দুই সৎ কর্মপরায়ণ দাসের অধীন। কিন্তু ওরা তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তাই নুহ ও লুত তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারল না। আর ওদেরকে বলা হলো, যারা জাহান্নানে ঢুকবে, তাদের সঙ্গে তোমরাও সেখানে ঢোকো।’(সুরা তাহরিম, আয়াত: ১০)