ভালো থাকার কী কী উপায় বলেছে ইসলাম

ভালো সবাই থাকতে চায়। ইসলামও চায় সবাই ভালো থাকুক। ইসলাম ভালো থাকার কয়েকটি উপায় বলেও দিয়েছে। মানসিক প্রশান্তির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, যা আছে তা নিয়ে তৃপ্ত থাকা। পরিতৃপ্ত মন বর্তমান নিয়ে অভিযোগ করে না। অতীত নিয়েও হতাশ হওয়া থেকে বিরত রাখে। তাহলে তকদির বা ভাগ্য নিয়ে দোটানায় না থেকে অল্পেই তুষ্ট থাকা যায়।

জাগতিক সফলতার বিচারে যিনি ওপরে রয়েছেন, তার দিকে না তাকিয়ে যিনি আমাদের নিচে রয়েছেন, তাদের দিকে তাকাতে হবে। তাহলে ভালোই থাকা যাবে না, মানসিকভাবেও স্বস্তি অনুভব করা যাবে।

সাহাবি আবু জর গিফারী (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে কিছু ভালো অভ্যাস গড়ার অসীয়ত করেছেন: জাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে যে আমার ওপরে রয়েছে, আমি যেন তার দিকে না তাকাই, বরং নিচের দিকে তাকাই। আমি যেন  গরিব দুস্থদের ভালোবাসি।’

ইসলামে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা এ জন্যই খুব মারাত্মক গুনাহ। কোনো কোনো হাদিসে সরাসরি বলা হয়েছে, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ্ বুখারি, হাদিস: ৫৯৮৪; সহিহ্ মুসলিম, হাদিস: ২৫৫৬) তাই আবু জর গিফারী (রা.)–কে নবীজি (সা.) জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আত্মীয়রা মুখ ফিরিয়ে নিলেও তুমি আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করবে।’

হাদিসে আছে, ‘গরিব দুঃখীরা জান্নাতে আগে আগে দৌড়াবে, যখন ধনীরা হিসেব দিতে দিতেই ক্লান্ত হয়ে পড়বে।’ গরিব দুঃখীদের ভালোবাসার সুফল অনেক। এতে আত্মগরিমা থেকে বেঁচে থাকা যায়। মনে অহংকার আসে না। নিজেকে অন্যের মতো সাধারণ মনে হয়। নবী–রাসুলরা এই আদর্শ লালন করতেন।

মানুষ অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়। আল্লাহর নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করার দরকার নেই। আল্লাহর সম্মান সবার ওপরে।

আয়েশা (রা.) বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, মানুষ নাখোশ হলেও যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী কাজ করে, মানুষের বিপরীতে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৪১৪)

নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘সত্য পুণ্যের পথ দেখায় এবং পুণ্য জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ (অবিরত) সত্য বলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে তাকে খুব সত্যবাদী হিসেবে লেখা হয়। পক্ষান্তরে মিথ্যা পাপের পথ দেখায় এবং পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ (সর্বদা) মিথ্যা বলতে থাকলে শেষ অবধি আল্লাহর কাছে তাকে মহা মিথ্যাবাদী হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৬০৯৪)

মহান আল্লাহর সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আল্লাহ যদি কাউকে না বাঁচান, তাহলে কারও পক্ষে তাঁর অবাধ্যতা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়। তাই নিয়মিত ‘লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়তে হবে।