সাদ ইবনে জুবায়েরের সূত্রে হাশিম ইবনে জুবায়ের আমাকে বলেছেন, ‘আমি আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাসকে বলেছিলাম, “বহু-ঈশ্বরবাদীরা তাদের এমনই অত্যাচার করছে যে, তার দলে ধর্মান্তর মার্জনীয় হয়ে গিয়েছিল।” তিনি বললেন, “জি, তা-ই, আল্লাহ্র কসম, তা-ই। যাকে ওরা ধরে মারত, তাকে না দিত খাবার, না পানি, মারের ঠেলায় সে সোজা হয়ে বসতে পারত না, ফলে শেষে ওকে যা বলা হতো, তা-ই করত।” তাকে ওরা বলত, “তোমার ঈশ্বর আল-লাত আর আল-উজ্জা, আল্লাহ্ নয়, কেমন?” সে বলত, “হ্যাঁ।” শেষে এমন হতো যে, ওখানে গুবরে পোকাজাতীয় কোনো পোকা পাওয়া গেলে সেটা দেখিয়ে তারা জিজ্ঞেস করত, “এই পোকাটাই তোমার ঈশ্বর, আল্লাহ্ নয়, হ্যাঁ।” সে বলত, “হ্যাঁ।” তার ইচ্ছা থাকত শাস্তি থেকে কোনোমতে রেহাই পাওয়া।’
আল-জুবায়ের ইবনে উকাসা ইবনে আবদুল্লাহ্ ইবনে আবু আহমদ আমাকে বলছে, তাকে কে একজন বলেছিল যে, বনু মাগজুমের কতিপয় লোক হিশাম ইবনে আল ওয়ালিদের কাছে গিয়েছিল হিশামের ভাই আল-ওয়ালিদ ইবনে আল-ওয়ালিদের ইসলাম গ্রহণের পর। তারা ঠিক করল মুসলমান হওয়া কিছু জোয়ান মানুষকে তারা পাকড়াও করবে। যাদের ধরা হলো তাদের মধ্যে ছিল সালমা ইবনে হিশাম এবং আইয়াশ ইবনে রাবিয়া। এখন আল-ওয়ালিদের বদমেজাজকে ওরা সবাই ভয় পেত। কাজেই তারা বলল, ‘এই নতুন ধর্ম চালু করেছে বলে এই লোকগুলোকে আমরা নসিহত করতে চাই। এতে করে অন্যান্য লোকের সুবিধা হবে।’ সে বলল, ‘ঠিক আছে, তাকে নসিহত করুন, কিন্তু সাবধান, ওকে হত্যা করবেন না।
’ সে তখন আবৃত্তি করল:
‘আমার ভাই উকায়স, কেউ তাকে হত্যা করবে না,
করলে যুদ্ধ হবে আমাদের মধ্যে চিরকাল।
‘তাঁর জীবন সম্পর্কে সাবধান, আল্লাহ্র কসম, যদি তোমরা তাকে হত্যা করো, আমি তোমাদের খান্দানের সব সেরা মানুষকে খতম করব, একটাকেও জ্যান্ত রাখব না।’
ওরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘ঈশ্বর এই বেটার বিচার করুন। যা বলেছে তারপর কে যেচে নিজের ঘাড়ে বিপদ নেবে। কারণ, এই একটা লোককে হত্যা করলে একটার বদলে আমাদের সবগুলো সেরা লোক হারাব।’
ওরা চলে গেল। এমনি করে আল্লাহ্ তাদের কবল থেকে রক্ষা করে দিলেন তাঁকে।
অনুবাদ: শহীদ আখন্দ
প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)’ বই থেকে