সুরা মুমতাহানা পবিত্র কোরআনের ৬০তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ২ রুকু, ১৩ আয়াত। মুমতাহানা মানে পরীক্ষণীয়। এ সুরায় আল্লাহ ও বিশ্বাসীদের মধ্যে যাঁরা শত্রু, তাঁদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করার ব্যাপারে কোরআনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
১৩ আয়াতবিশিষ্ট এ সুরার প্রথম আয়াতে শত্রুদের সঙ্গে বন্ধুত্বকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! আমার ও তোমাদের শত্রুদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কোরো না। তোমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছ, অথচ তারা তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে, রাসুল ও তোমাদের স্বদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে বিশ্বাস করো। যদি তোমরা আমাকে খুশি করার জন্য আমার পথে জিহাদে বের হয়ে থাকো, তবে কেন তোমরা তাদের সঙ্গে গোপনে বন্ধুত্ব করছ? তোমরা যা গোপন করো ও তোমরা যা প্রকাশ করো, তা আমি ভালো করেই জানি। তোমাদের মধ্যে যে কেউ এটা করে, সে তো সরল পথ থেকে সরে যায়।’
সুরার ১০ম আয়াতে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর আন্তধর্ম বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! বিশ্বাসী নারীরা দেশত্যাগী হয়ে তোমাদের কাছে এলে তোমরা তাদের পরীক্ষা কোরো। আল্লাহ তাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে ভালো করেই জানেন। যদি তোমরা জানতে পারো যে তারা বিশ্বাসী, তবে তাদের অবিশ্বাসীদের কাছে ফেরত পাঠিও না। বিশ্বাসী নারীরা অবিশ্বাসীদের জন্য বৈধ নয়, আর অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসী নারীদের জন্য বৈধ নয়। অবিশ্বাসীরা যা খরচ করেছে, তা তাদের ফিরিয়ে দিয়ো। তারপর তোমরা তাদের বিয়ে করলে তোমাদের কোনো পাপ হবে না, যদি তোমরা তাদের দেনমোহর দাও। তোমরা অবিশ্বাসী নারীদের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা খরচ করেছ, তা ফেরত চাইবে এবং অবিশ্বাসীরা ফেরত চাইবে, তারা যা খরচ করেছে। এটাই আল্লাহর বিধান। তিনি তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করে থাকেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, তত্ত্বজ্ঞানী।’
১১তম আয়াতে বলা হয়েছে, কোরআনে এসেছে, ‘তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে অবিশ্বাসীদের কাছে চলে যায়, তবে যাদের স্ত্রীরা হাতছাড়া হয়ে গেছে, তাদের তারা যা খরচ করেছে, তার সমান অর্থ দেবে, যদি তোমাদের সুযোগ আসে। ভয় করো আল্লাহকে, তোমরা যাঁর ওপর বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা মুমতাহানা, কোরানশরিফ: সরল বঙ্গানুবাদ, অনুবাদ: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন)