জাকাত কীভাবে দেবেন

আরবি জাকাত শব্দের অর্থ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি। ইসলামে আবশ্যক ধর্মীয় দান অর্থেই জাকাত শব্দ ব্যবহৃত হয়। কোনো মুসলমানের ধনসম্পদ থেকে তার নিজের ও পরিবারের সারা বছরের প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটানোর পর নির্ধারিত পরিমাণ ধনসম্পদ তার মালিকানায় থাকার এক বছর পূর্ণ হলে সেই সম্পদের নির্দিষ্ট একটি পরিমাণ শরিয়া-নির্ধারিত খাতগুলোয় প্রদান করাকে জাকাত বলা হয়। যে পরিমাণ ধনসম্পদ থাকলে জাকাত ফরজ হয়, ইসলামি পরিভাষায় তাকে নিসাব বলা হয়। আল কোরআনে জাকাত জাকাত শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে ৩২ বার, নামাজের সূত্রে ২৬ বার, স্বতন্ত্রভাবে চারবার এবং পবিত্রতা অর্থে দুবার। এ ছাড়া জাকাত কখনো সদাকাত, আবার কখনো ইনফাক শব্দ দিয়ে বোঝানো হয়েছে। ইনফাক শব্দটি ব্যাপক, সদাকাত শব্দটি সাধারণ ও জাকাত শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়েছে, অর্থাৎ এ তিনটি শব্দ একে অন্যের স্থলে ব্যবহৃত হয়েছে। কোরআনে ১৯টি সুরায় জাকাতের আলোচনা এসেছে।

জাকাতের গুরুত্ব ইসলামে নামাজের পরই জাকাতের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনের বহু স্থানে নামাজের পাশাপাশি জাকাত আদায়ের কথা বলা হয়েছে। জাকাত দাতার মনকে ধনসম্পদের প্রতি লোভ থেকে মুক্ত ও পবিত্র করে। ধনীদের ধনসম্পদে যে দরিদ্রদের অধিকার রয়েছে, এই সত্যকেও তা প্রতিষ্ঠিত করে। পবিত্র কোরআনের সুরা জারিয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তাদের (সম্পদশালীদের) ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে।’ এভাবে জাকাতের মাধ্যমে সমর্থ ব্যক্তিদের সম্পদের কিছু অংশ ব্যয়ের ফলে তাদের অবশিষ্ট ধনসম্পদ পবিত্র হয়। সুরা তওবায় বলা হয়েছে, ‘তুমি ওদের ধনসম্পদ থেকে সদকা আদায় করো। এর মাধ্যমে তুমি তাদের পবিত্র করে দেবে।’ জাকাত শব্দের আরেক অর্থ বৃদ্ধি। বস্তুত জাকাত দিলে ধনসম্পদ বাড়ে।

জাকাত দেবেন কাকে

সুরা তাওবার ৬০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে যে ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায় কর্মী, নও মুসলিম ও অনুরাগী, দাস-দাসী, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, মুজাহিদ ও বিপদগ্রস্ত মুসাফিরকে জাকাত দিতে হবে।