রোজার প্রস্তুতি

রোজার মাসে পূর্বপরিকল্পনা এবং প্রস্তুতিসহ কাজ করার গুরুত্ব অনেক। কারণ, পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে শুরু করলে কাজ সুন্দর ও সফল হয়। তাই রোজার মাস আসার আগেই প্রস্তুতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখা যেতে পারে:

১. নবী (সা.) রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন আর আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (মুসনাদে আহমদ)

২. রমজানে দরিদ্র–অসহায় লোকদের দান-সদকা করার জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু টাকা আলাদা করে রাখা উচিত। নবী (সা.) রমজানে বেশি করে দান করতেন। হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) পৃথিবীর সব মানুষের চেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন। রমজান মাসে তাঁর দানের হাত আরও প্রসারিত হতো। (বুখারি)

৩. রমজান গুনাহ মুক্তির মাস। তাই এখন থেকেই গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুশীলন করতে হবে; বিশেষ করে পরনিন্দা, অনর্থক কথাবার্তা এবং চোখের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

৪. জামাতে নামাজ আদায় করলে তাঁকে দুটি মুক্তির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এক. জাহান্নাম থেকে মুক্তি, এবং দুই. মুনাফেকি থেকে মুক্তি। তাই রমজানে জামাতে নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।

৫. রোজার মাসে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তাই রমজানে কোরআন তিলাওয়াতে মনোযোগী হতে হবে। কোরআনে আছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের পথপ্রদর্শক ও সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মীমাংসারূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। অতএব, তোমাদের মধ্যে যেকেউ এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে অবশ্যই রোজা রাখে। আর যে রোগী বা মুসাফির তাকে অন্য দিনে এ সংখ্যা পূরণ করতে হবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না, যাতে তোমরা নির্ধারিত দিন পূর্ণ করতে পার ও তোমাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করার জন্য আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করতে পার, আর তোমরা কৃতজ্ঞ হলেও হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)

৬. রমজানে নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হতে হবে, যাতে রমজানে ইশারায়, চাশত, তারাবি এবং তাহাজ্জুদ নামাজ ভালোভাবে আদায় করা যায়। নবী (সা.) বলেন, ‘রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল।’ (বায়হাকি)