প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে হজে যাওয়ার জন্য খরচ বেশি নেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানে এ বছর হজের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ রুপি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৫ টাকা। আর ভারতে সরকারিভাবে হজে যেতে ব্যয় হবে চার লাখ রুপির কাছাকাছি অর্থ, বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ টাকার কিছু বেশি। এই দুই দেশের তুলনায় হজে যেতে বাংলাদেশে খরচ হবে দেড় লাখ টাকার বেশি।
এবার বাংলাদেশে সরকারিভাবে হজে যেতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। আর বেসরকারিভাবে খরচ হবে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার হজের খরচ দেড় লাখ থেকে ২ লাখ ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এভাবে হজের খরচ বৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। হজের খরচ চার লাখ টাকার মধ্যে আনতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতি বলেন, এবার হজের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও অনেকে নিবন্ধন করা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশিদের হজের খরচ কেন বেশি, সে প্রশ্নের জবাবে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুই দেশের তুলনায় বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কয়েকটি খাতে খরচ বেশি হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের হজযাত্রীরা মক্কার মিসফালা এলাকায় থাকেন। অপর দিকে ভারত ও পাকিস্তানের হজযাত্রীরা থাকেন মক্কার আজিজিয়া এলাকায়। আজিজিয়ার চেয়ে মিসফালা এলাকার বাসাভাড়া বেশি।
মতিউল ইসলাম বলেন, আজিজিয়ার কাছে মিনা। তাই মিনায় ভারত ও পাকিস্তানের হজযাত্রীরা পায়ে হেঁটে যেতে পারেন। কোনো বাস ভাড়া করতে হয় না। অপর দিকে মিসফালা থেকে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের মিনায় আনা–নেওয়া করতে প্রতি ১০০ জনের জন্য একটি বাস ব্যবহার করা হয়। এতে খরচ বেড়ে যায়। মিনায় তাঁবুতে থাকার ভাড়াও বাড়তি দিতে হয়। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের হজযাত্রীদের মদিনায় যাওয়া–আসার ক্ষেত্রে নন–এসি বাস ভাড়া করা হলেও বাংলাদেশিদের জন্য এসি বাস ভাড়া করা হয়। এসব কারণে খরচ বেশি।
অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম বলেন, এ বছর হজযাত্রীদের ফ্লাইটভাড়া প্রায় ৬০ হাজার টাকা বেড়েছে এবং ডলারের বিপরীতের টাকার দাম কমায় গত বছরের তুলনায় খরচ বেশি হচ্ছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ হতে পারে। এ বছর হজে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের কোটা রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। গতকাল রোববার পর্যন্ত হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন মোট ৮০ হাজার ৭৩৪ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ৯ হাজার ৩৪২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭১ হাজার ৩৯২ জন নিবন্ধন করেছেন। ১৬ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে।