চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে শুরু হয়েছে শিবচতুর্দশী মেলা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ ফুট ওপরে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় চন্দ্রনাথ ধামের অবস্থান। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে থেকে তীর্থযাত্রীরা সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে আসেন । মেলা চলবে সোমবার পর্যন্ত।
ফাল্গুন মাসে শিবচতুর্দশী বা শিবরাত্রি উপলক্ষে প্রাচীনকাল থেকে সীতাকুণ্ডে ধর্মীয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় প্রতিবছরই কয়েক লাখ লোকের সমাগম হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবরাত্রিতে ব্রত রেখে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় থাকা চন্দ্রনাথ ধামে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে ভক্তদের আগমন ঘটে।
এ ছাড়া চন্দ্রনাথ পাহাড়ের নিচে থাকা ব্যাসকুণ্ডে নিজের পাপমুক্ত করতে স্নান করেন পুণ্যার্থীরা। একই ব্যাসকুণ্ডে চতুর্দশী তিথিতে মৃত পূর্বপুরুষের আত্মার সন্তুষ্টির জন্য তর্পণ করেন। পরে অমাবস্যা তিথিতে গয়াকুণ্ডে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের মাধ্যমে পিণ্ড দান করেন। অনেক পুণ্যার্থী পাহাড় বেয়ে চন্দ্রনাথ ধামে উঠতে না পারলেও স্নান, তর্পণ ও পিণ্ড দান করেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ব্যাসকুণ্ডের পাড়ে প্রবেশপথে মস্তক মুণ্ডনের জন্য সারিবদ্ধভাবে বসেছে নরসুন্দরেরা। ব্যাসকুণ্ডের পাড়ের চারপাশে ছাউনিতে ছোট ছোট জায়গা নিয়ে বসেছে ব্রাহ্মণেরা। যেখানে তীর্থযাত্রীরা তর্পণ ও শ্রাদ্ধ করবেন। এরপর ভৈরব মন্দিরে পূজা দিয়ে পাহাড়ের দিকে যেতে থাকেন পুণ্যার্থীরা। প্রথম পাহাড়ের চূড়ায় থাকা স্বয়ম্ভুনাথ মন্দির পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে সাধুসন্ন্যাসীদের দেখা মেলে।
ব্যাসকুণ্ডের পাড় থেকে পশ্চিম দিকে রেলস্টেশন পর্যন্ত মন্দির সড়কের দুই কিলোমিটার পথের দুই পাশেই নানা জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেরার পথে কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরেন তীর্থযাত্রীরা। এ ছাড়া থাকার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তীর্থযাত্রীরা। সকাল থেকে প্রতিটি ট্রেনে করে তল্পিতল্পা নিয়ে সীতাকুণ্ড স্টেশনে নামছেন তীর্থযাত্রীরা। অনেকে বাস রিজার্ভ করে আবার অনেকে আলাদাভাবে সীতাকুণ্ডে আসছেন।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত সাধুসন্ন্যাসীদের সঙ্গে কথা হয় । তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিবছরই এ সময়ে তারা সীতাকুণ্ডে আসেন। কেউ ৭ দিন আবার কেউ ১৫ দিন থাকেন।
মেলা কমিটি জানিয়েছে, এবার চতুর্দশী তিথি দুই দিন হওয়ায় মেলা চলবে চার দিন। ইতিমধ্যে অনেক পুণ্যার্থী সীতাকুণ্ডে ভিড় করছেন। আগামী তিন দিনে লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর আগমন ঘটবে। পুণ্যার্থীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য বিভিন্ন সেবা সংস্থা কাজ করছে