প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। ‘প্রবারণা’ শব্দের অর্থ প্রকৃষ্টরূপে বরণ করা, নিষেধ করা ইত্যাদি। ‘বরণ করা’ অর্থে বিশুদ্ধ বিনয়াচারে জীবন পরিচালিত করার আদর্শে ব্রতী হওয়া, আর ‘নিষেধ’ অর্থে আদর্শ ও ধর্মাচারের পরিপন্থী কর্মগুলো পরিহার করাকে বোঝায়। বর্ষাবাস সমাপনান্তে ভিক্ষু সংঘ আপন আপন দোষত্রুটি অপর ভিক্ষু সংঘের কাছে প্রকাশ করে তার প্রায়শ্চিত্ত বিধানের আহ্বান জানায়। এমনকি অজ্ঞাতসারে কোনো অপরাধ হয়ে থাকলে তার জন্যও ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়। শ্রাবস্তীর জেতবনে অবস্থানকালে গৌতম বুদ্ধ ভিক্ষু সংঘে পালনীয় হিসেবে এর প্রবর্তন করেন।
আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে প্রবারণা পালিত হয়। প্রবারণার পর ভিক্ষু সংঘকে অধীত জ্ঞান প্রচারের জন্য গ্রামে-গঞ্জে যেতে হয়। এ সময় তাঁরা কল্যাণের বাণী প্রচার করেন, যাতে মানুষসহ সব প্রাণীর কল্যাণ সাধিত হয়। এভাবে প্রবারণা শেষ হওয়ার পর প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে পালিত হয় কঠিন চীবর দান উৎসব। প্রবারণা পূর্ণিমার অন্য একটি উৎসবময় দিক হলো ফানুস ওড়ানো। বৌদ্ধশাস্ত্রমতে বুদ্ধদেব আধ্যাত্মিক শক্তিবলে দেবলোকে গিয়ে মাকে ধর্মদেশনা করে এদিন স্বর্গ থেকে মর্তে অবতরণ করেন। এ কারণে বৌদ্ধরা প্রবারণা পূর্ণিমায় আকাশে প্রদীপ প্রজ্বালনের প্রতীকরূপে ফানুস উত্তোলন করে।