বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মিয়ানমারকেও কিছু বলা যাবে না: প্রশ্ন ফখরুলের

মিয়ানমার সীমান্ত থেকে টেকনাফ-সেন্ট মাটিন নৌপথে নৌযান লক্ষ্য করে গুলির ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিয়ানমারের মতো একটা দেশকেও কিছু বলা যাবে না? এটা যে কতটা নতজানু, দাসসুলভ মনোভাব হতে পারে। সীমান্তে মানুষ মারছে, পানি দিচ্ছে না, অথচ সরকার একটা কথা বলে না।

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ এ সভার আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, চীন বিশ্বে একনায়কতন্ত্র চলছে—এমন দেশের দিকে ঝুঁকছে। সারা বিশ্বেই একনায়কতন্ত্র বাড়ছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এখন প্রতিদিনই পুরো জাতির জন্যই কালো দিবস। বর্তমান সরকার ১৯৯৬ সালে এসেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ শুরু করেছে। সচেতনভাবে পরনির্ভরশীল দেশে পরিণত করছে। সাংবাদিক যাঁরা সাহস করে কাজ করছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফখরুল বলেন, বেনজীর, আজিজ, আনারের ঘটনা সাংবাদিকেরাই তুলে এনেছেন।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, সেনাপ্রধান জালিয়াতি করবেন, পুলিশপ্রধান ডাকাতি করে দেশে সাম্রাজ্য গড়ে তুলবেন, কল্পনা করা যায়?

সংবাদের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কিছু বাণী প্রচার করা হয়, তিনি তা শুনছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি বলছিলেন, যারা আজকে সম্পদ লুণ্ঠন করে পাচার করে নিয়ে যায়, তাদের এ দেশের মাটিতে জায়গা নেই।’ তিনি বলেন, ‘যারা এখন ক্ষমতায় আছে, তারা কি একবারও এ কথা শুনছে?’

মির্জা ফখরুল বলেন,  ‘ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বিপ্লব করেছেন।  আমাদেরও এটা সম্ভব। বলছি না যে এখান থেকেই করতে হবে। বাইরে যাঁরা থাকেন, তাঁরা করুক। দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ অমুক–তমুক আইন, গুম করে দেওয়ার বিষয় আছে।’

বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে বাম–ডান সবাইকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছি।  সাংবাদিকরাও যদি এক প্ল্যাটফর্মে আসেন, তাহলে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে।’

ধারণাপত্র পাঠ করেন বিএফইউজের একাংশের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। অনুষ্ঠানে নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, আগে সাংবাদিকেরা কিছু বললে মান্য করা হতো, সম্মান ছিল অনেক। এখন সেই সম্মান হারিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে এক থাকতে হবে।

বিএফইউজের সভাপতি রহুল আমিন গাজী বলেন, আগে সবাই এই দিন কালো দিবস পালন করতেন। এখন অনেকে তা সাদা দিবস বলতে চান। একদলীয় সংসদ। ১৯৭৫ সালে যে অবস্থা ছিল, এখনো সেই অবস্থা। এখন প্রতিদিনই ১৬ জুন চলছে। ন্যায়বিচার,  স্বাধীন সাংবাদিকতা, গণতন্ত্র এখন স্বপ্নের মতো।

সভায় আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান,  সৈয়দ আবদাল আহমেদ, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।