বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত সমাবেশে
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত সমাবেশে

সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিনে মুক্তি নিয়ে প্রশ্ন রিজভীর

সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে জামিনে মুক্তি পান, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাবের হোসেন চৌধুরী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার গণহত্যার একজন সহযোগী ছিলেন। তাঁর নির্দেশে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ১১ জন গুম–খুনের শিকার হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এই এলাকার পাঁচজন শহীদ হয়েছেন। এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না।

রাজধানীর খিলগাঁওয়ে গুম-খুন-শহীদ হওয়া পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত এক সমাবেশে রিজভী এ কথা বলেন। সাবের হোসেন চৌধুরীর বিচারের দাবিতে এই সমাবেশ হয়।

ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীকে গত রোববার রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে আটকের পর গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। সোমবার বিএনপি কর্মী মকবুল হোসেন হত্যা মামলায় সাবের হোসেন চৌধুরীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দুই বছর আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষে মকবুল নিহত হয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৃথক ছয় মামলায় জামিনে মুক্তি পান সাবের হোসেন চৌধুরী।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পান, সে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী। তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। এই সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন। তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় একজন হত্যা মামলার আসামি কীভাবে জামিন পান? তাহলে এই সরকার কাকে প্রোটেকশন দিচ্ছে?’

বিগত সরকারের সময় খিলগাঁও এলাকায় জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় নির্যাতনে বিএনপি-ছাত্রদলের কতজন হাত-পা হারিয়েছেন। ছাত্রদল নেতা জনিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ১৬টি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সাবের হোসেন চৌধুরী এর জন্য দায়ী নন কি?’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা গণহত্যা চালিয়েছেন। তাঁর সহযোগী ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি শেখ হাসিনার চেতনায় লালিত-পালিত। তাঁদের আমলে কেউ গণতন্ত্রের পক্ষে টুঁ শব্দটি করতে পারেনি। সাবের চৌধুরী বিনা ভোটে বছরের পর বছর সংসদ সদস্য থেকেছেন। বিএনপির পক্ষে, খালেদা জিয়ার পক্ষে, তারেক রহমানের পক্ষে কথা বলা যায়নি।

সাবের হোসেন চৌধুরী শেখ হাসিনার পক্ষে গুম-খুনের কর্মসূচি সফল করেছেন। এখন তিনি যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিনে মুক্তি পান, তাহলে যেসব পুলিশ ক্রসফায়ার দিয়েছে, বাসা থেকে তুলে নিয়ে আঙুলের নখ তুলে ফেলেছে, মাথায় বন্দুক রেখে গুলি করে হত্যা করেছে, তারা তো কয়েক দিনের মধ্যে ছাড়া পেয়ে যাবে। এর উত্তর কী দেবে অন্তর্বর্তী সরকার?

পরে সাবের চৌধুরীর গ্রেপ্তারের দাবিতে রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা খিলগাঁও এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ, মহানগর বিএনপি নেতা ইউনূস মৃধা, সাবেক কাউন্সিলর লিটন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি জাহিদুল কবির, যুবদলের মেহেবুব মাসুম, আরিফুর রহমান, তৌহিদুর রহমান, মাসুদুর রহমান, রাজু আহমেদ প্রমুখ।