এখন তো কথা বলার পরিবেশটা নেই। ভয়ভীতি, হামলা-মামলার হুমকি, হয়রানিসহ নানাভাবে নাজেহাল হওয়ায় মানুষের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণেও মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কোন পথে’ শিরোনামে এক সভায় রাজনীতিবিদ ও আইনজীবীদের আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ ওই আলোচনার আয়োজন করে। আলোচনায় অংশ নিয়ে একাধিক বক্তা বলেন, প্রতিবছর আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ও হাইকোর্ট পারমিশন পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বার কাউন্সিলের আইনজীবীদের ‘বেনেভোলেন্ট ফান্ড’ বৃদ্ধি ও ফান্ডের টাকা ‘জীবদ্দশায়’ উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিচারক নিয়োগে নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন আলোচকদের কেউ কেউ।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেন, দেশে সত্য বলার সাহসী লোকের সংখ্যা কম, যে কারণে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার পতনের জন্য গত ১৩ বছরে অন্ততপক্ষে ১৩০টি ঘটনা ছিল। সে ঘটনাগুলো বিরোধী দল কাজে লাগাতে পারেনি। জনগণকেও সংগঠিত করতে পারেনি। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি অবশ্যই বদলাবে বলে তিনি মনে করেন। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খোঁজার মতো বলেও মন্তব্য করেন নুরুল হক।
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, ৮৪-৮৫ বার সময় পিছিয়েছে। এখন পর্যন্ত তদন্তের অগ্রগতি নেই। একটি বিচারের জন্য এভাবে মানুষকে যুগের পর যুগ রায়ের জন্য ঘুরতে হয়, তাহলে মানুষ মরার পর ন্যায়বিচার হবে? জায়গাজমি নিয়ে যাঁদের মামলা আছে, বাপ মামলা করে গেছে, বাপের কবরে দূর্বা গজিয়েছে। তারপরও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মোহসিন রশীদ বলেন, বিচার বিভাগ আগে যখন মাসদার হোসেন মামলা (বিচার বিভাগ পৃথক্করণসংক্রান্ত) হয়নি, যখন এক্সিকিউটিভ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয়নি, তখন কিন্তু এর চেয়ে বেশি স্বাধীন ছিল। অনেক স্বাধীন ছিল।
আইনজীবী অধিকার পরিষদের সহসমন্বয়ক এরশাদ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন, আইনজীবী অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক মোহাম্মদ জীশান মোহসিন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।