বিএনপি জনগণের কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে ক্ষমতায় আসার অন্ধকার গলি খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি পরাজয়ের ভয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের প্রবাসী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) জানে জনগণ তাদের বর্জন করেছে। এ কারণেই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না। তাই তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে। তারা এখন নির্বাচনে আলোর পথ এড়িয়ে অন্ধকারের গলির দিকে তাকিয়ে আছে।’
সরকারপ্রধান ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত চক্র) এখন নির্বাচন বাতিলের দাবি করছে।’
২০০৮ সালের সংসদীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল। অপর দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ আসন পেয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন থেকেই তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায় না। তারা বাস, লঞ্চ এবং ট্রেনে আগুন লাগিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। তারা যত বেশি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অগ্নিসন্ত্রাস করবে, জনগণ তত বেশি তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, নিজেরা অফিসে তালা দেয়, আবার নিজেরাই ভাঙে। এ নিয়ে আবার গর্ব বোধ করে যে চাবি হারিয়েছে। চাবি গেল কোথায়? তালা তো তাদেরই দেওয়া ছিল। তাদের চাবি খোয়া যাবে, চাবি হারাবে এবং তারা পথও হারাবে। তারা পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ নির্বাচনে বিজয় বাংলাদেশের জনগণের বিজয়। নির্বাচনে বিজয় গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতার বিজয়।’ তিনি দেশ পরিচালনায় সবার সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালিসহ ২৯টি দেশের প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে রেকর্ড পঞ্চম এবং টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭ জানুয়ারির যে নির্বাচন, সে নির্বাচনে জনগণের ভোটের অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি। আমি বলব, এটা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, যেটা আমরা নিশ্চিত করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। হ্যাঁ, নৌকা মার্কা দিয়েছি, সেই সঙ্গে বলেছি, যারা নির্বাচন করতে চায় করতে পারবে। উন্মুক্ত করে দিয়েছি, কাজেই সেখানে নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে রয়েছি। সেখানে নারী হত্যা, শিশু হত্যা হচ্ছে, যা গণহত্যার শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দাও জানিয়েছি। কিছু সহযোগিতাও পাঠানো হয়েছে এবং আরও পাঠানো হবে।’ তিনি এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধের জন্য বিভিন্ন ফোরামে কথা বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সব সময় শান্তির পক্ষে এবং জাতির পিতার রেখে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’–এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। গত ১৫ বছরের বাংলাদেশ, বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’ মিয়ানমারের প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে যখন ঝামেলা হয়েছিল, তখন আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং এ নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো বিবাদে জড়াইনি; বরং আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
প্রবাসী আয় দেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বৈধ চ্যানেলে তা পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তাঁর সরকারের চালু করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম এবং প্রবাসী পেনশন স্কিম গ্রহণ করার জন্য তাঁদের প্রতি আহ্বান জানান।